চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকার একটি সিঅ্যান্ডএফ কার্যালয় এবং চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির একটি ভবনের নিচ তলার দোকান থেকে ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি উদ্ধার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

সোমবার (৩ জুন) ডিবি বন্দর ও পশ্চিম জোনের বিশেষ একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে আমিরুল ইসলাম ওরফে টিটু (৩৫) ও আব্দুল মোনাফ (৩৩) নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে আমিরুল ইসলাম টিটু শাহরিয়ার অ্যান্ড ব্রাদার্স লিমিটেড নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ অফিসের কর্মচারী এবং আব্দুল মোনাফ আইনজীবী সমিতির দোয়েল ভবনের নিচ তলার একটি দোকানে মালিক।

ডিবি কর্মকর্তারা জানান, সিঅ্যান্ডএফ কার্যালয়ে মজুত থাকা স্ট্যাম্পগুলো কাস্টমস হাউসে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত নানা কাজে ব্যবহৃত হতো। আর চট্টগ্রাম আদালত এলাকা থেকে জাল স্ট্যাম্প পাইকারি বিক্রি হচ্ছিল। এছাড়াও সেখানকার দোকান থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে লোকজন মামলা-মোকদ্দমা ও নানা চুক্তির কাজে ব্যবহার করে আসছিলেন।

গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে নগরের ডবলমুরিং থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুজনকে আজ (মঙ্গলবার) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ডিবি জানায়, সোমবার প্রথমে সিঅ্যান্ডএফ কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে তারা। এ সময় সেখান থেকে ৫০০ টাকা মূল্যমানের দুই হাজার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্পসহ আমিরুলকে আটক করা হয়। এগুলোর বাজারমূল্য ১০ লাখ টাকারও বেশি। আসামি আমিরুলকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে জাল স্ট্যাম্পের উৎস জানতে চাওয়া হয়। একপর্যায়ে স্বীকার করেন স্ট্যাম্পগুলো তিনি আদালত ভবনের একটি দোকান থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে জানান। 

এরপর আইনজীবী দোয়েল ভবনের নিচের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন মূল্যমানের মোট ১৩ হাজার ৫১০টি জাল স্ট্যাম্প ও জাল কোর্ট ফি জব্দ করা হয়। যেগুলোর বাজারমূল্য ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা।

মহানগর ডিবির বন্দর ও পশ্চিম জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আলী হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সিঅ্যান্ডএফ কার্যালয় থেকে উদ্ধার হওয়া জাল স্ট্যাম্পগুলো আমদানি-রপ্তানির কাজে কাস্টমস হাউসে ব্যবহৃত হত। তিনি এগুলো চট্টগ্রাম আদালত এলাকা থেকে সংগ্রহ করতেন। আইনজীবী দোয়েল ভবনের নিচ তলার দোকান থেকে উদ্ধার হওয়া স্ট্যাম্পের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি ঢাকা থেকে এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। এ কারণে রিমান্ডে এনে তাকে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

যে সিঅ্যান্ডএফ কার্যালয় থেকে জাল স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে সেটির মালিক জড়িত কি না জানতে চাইলে ডিবি কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, প্রাথমিক জানা গেছে গ্রেপ্তার হওয়া সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মচারী এ ঘটনায় জড়িত। তিনি জাল স্ট্যাম্প সংগ্রহ করে মজুত করে বিক্রি করতেন।

এমআর/এসকেডি