সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, অতীতের নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতার ফলে বর্তমানে মানুষ নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। অতীতে নির্বাচনে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল তার কোনো কিছুই এখন নির্বাচনে পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সংগঠনটির উদ্যোগে আয়োজিত এক অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের হলফনামায় উল্লিখিত বিভিন্ন তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরার জন্যই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুজন।

সুজন সম্পাদক বলেন, আমরা নির্বাচনের ধাপে ধাপে সংবাদ সম্মেলন না করে শেষ ধাপের পর একটি সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেছি। আমার মতে এই নির্বাচনটি হচ্ছে— ‘নাই’ এর নির্বাচন। এখানে ভোটার নাই, বিরোধী দল নাই এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাও নাই। নির্বাচন যে নির্বাসনে চলে গেছে এটা তারই প্রতিফলন। এর মূল কারণ হলো আস্থাহীনতা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন সুজনের প্রধান কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক দলভিত্তিকভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনেকটা নির্দলীয় অবয়ব পেয়েছে। কেননা ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিচ্ছে না। দলীয় কৌশলের কারণে দলটির নেতৃবৃন্দ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

এ সময় তিনি ৪৫৯টি উপজেলার ১ হাজার ৮৭৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর তথ্য তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।  তিনি বলেন, নির্বাচন শুধু নির্বাসনেই যায়নি, আমি বলব নির্বাচন-ই নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠানের কিছু লোক দেখানো অনুশীলন হচ্ছে। ভোটের যে হার দেখানো হচ্ছে মানুষ তাও বিশ্বাস করছে না। আমরা সামরিক শাসকের অনেক সমালোচনা করি। কিন্তু সামরিক শাসকরা যে স্থানীয় নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে গেছে তা এখনো আঁকড়ে ধরে আছি। স্থানীয় সরকারের ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা এখনো চালু রাখা হয়েছে। জমিদারি ব্যবস্থার প্রতি আমাদের যে বাসনা নির্বাচনের মাধ্যমে সে বাসনাই চরিতার্থ করা হচ্ছে বলে আমি মনে করি।

আরএইচটি/এসকেডি