চট্টগ্রামের কুমিরা ফেরিঘাট থেকে ১৫০ জনের বেশি যাত্রী নিয়ে সন্দ্বীপ যাচ্ছিল একটি ফিশিং ট্রলার (স্থানীয় ভাষায় সার্ভিস বোট)। মাঝপথে হঠাৎ বিকল হয়ে যায় ওই ট্রলারের ইঞ্জিন। ইঞ্জিন কাজ না করায় স্রোতে ভেসে নির্ধারিত রুটের থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যায় ট্রলারটি।

মঙ্গলবার (৪ জুন) সকাল আটটায় কুমিরা ঘাট থেকে যাত্রা শুরু করে ট্রলারটি। ৩০ মিনিট চলার পর ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকল হওয়ার পর একঘণ্টা পর্যন্ত ভাসতে থাকে ট্রলারটি। স্রোতের কারণে উত্তরে বঙ্গোপসাগরের দিকে কয়েক কিলোমিটার দূরে চলে যায় সেটি। এরমধ্যে যাত্রীদের মধ্যে দেখা দেয় নানা শঙ্কা। প্রায় একঘণ্টা পর আরেকটি মালবোঝাই ট্রলার গিয়ে যাত্রীবাহী বিকল ট্রলারটি উদ্ধার করে। বিকল ট্রলারটি টেনে নিয়ে যাওয়া হয় সন্দ্বীপের গুপ্তচড়া ফেরিঘাটে। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে ওই ফেরিঘাটে পৌঁছে ট্রলারটি।

ওই ট্রলারে থাকা মো. নুরুল আবছার ফোহাদ নামে এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সকাল ৮টায় সার্ভিস বোটে যাত্রা শুরু হয়। বোটে নারী, শিশুসহ ১৫০ জনের বেশি যাত্রী ছিল। ৩০ মিনিট চলার পর ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। এরপর যাত্রীদের অনেকে কান্না করছিল, আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেকে বমি করে। সবার মধ্যে ভয় কাজ করছিল। কারণ যেকোনো সময় বড় ধরনের বিপদ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘বিকল হওয়ার ৩০ মিনিট পর্যন্ত বোটের মাঝি কর্তৃপক্ষকে জানায়নি। এরপর আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে একটি মালবাহী ট্রলার গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। সেখানে মালিকপক্ষ একটি স্পিডবোটও পাঠায়। এখন বর্ষাকাল। আমাদের ভাগ্য ভালো ওই সময় সাগর বেশি উত্তাল ছিল না। উত্তাল থাকলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারতো।’

রাকিব নামে আরেক যাত্রী জানান, সেই বোটে আমিও ছিলাম। আল্লাহর রহমতে বেঁচে ফিরেছি।

এই ঘটনায় অনেকে বোটের মাঝির গাফলতি আছে বলে অভিযোগ করেছেন। মাঝি কর্তৃপক্ষকে বিকল হওয়ায় খবর না জানানোয় তার শাস্তি দাবি করছেন। 

মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ইঞ্জিন চালককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। কারণ ইঞ্জিন বিকল হওয়ার পর ঘাট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেনি।’

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে কুমিরা-গুপ্তছড়া ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাগর উত্তাল থাকায় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

আরএমএন/জেডএস