হজে পাঠানোর নামে ২০২৩ সালে ৪৪ জন হজযাত্রীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ‘সাজিদ হজ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। টাকা নিয়ে ওই বছর তাদের প্রাক নিবন্ধন করলেও চূড়ান্ত নিবন্ধন না করেই আত্মগোপনে চলে যায়। যার কারণে তারা (হজযাত্রী) হজে যেতে পারেনি। এরপর ভুক্তভোগীদের মামলায় গ্রেপ্তার হন এজেন্সি মালিক। পরে সেসব হজযাত্রীদের চলতি বছর (২০২৪) হজে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামিনে বের হন। কিন্তু বের হয়ে ফের আত্মগোপনে চলে গেছেন তিনি। এ অবস্থায় এজেন্সি মালিককে গ্রেপ্তার ও হজের পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

রোববার (২৬ মে) রাজধানীর সেগুন বাগিচা ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বেলাল হোসেন জানান, আমরা ২০২৩ সালে পবিত্র হজ পালনের জন্য এই এজেন্সি দিয়ে প্রাক নিবন্ধিত করাই। এজেন্সির মালিক অহিদুল আলম ভূঁইয়া ও তার ছেলে সাজিদুর রহমানসহ কয়েকজন প্রতারক, আমাদের জানান, সরকার (নির্ধারিত) জন প্রতি ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। আমরা যেহেতু হজে যাবো তাই ট্রাভেলসের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিই। পরিপূর্ণ টাকা জমা দেওয়ার পর চূড়ান্ত নিবন্ধন (পিআইডি) করতে গড়িমসি করেন তারা। শেষ সময় এসে বলে এখনো নিবন্ধনের সময় বাকি আছে ঠিক সময়ে নিবন্ধন করব। এরপর গত বছর  চূড়ান্ত নিবন্ধন না করে হজ শুরু হওয়ার এক মাস আগে এজেন্সির অফিস বন্ধ করে আত্মগোপন চলে যায়। আমাদের পাসপোর্ট পর্যন্ত আটকিয়ে রাখে।

পরে মন্ত্রণালয়, হাব এবং হাজী ক্যাম্প এইসব জায়গায় রিপোর্ট করেও কোনো সুরাহা না হওয়ায় এই এজেন্সির বিরুদ্ধে ঢাকা খিলক্ষেত থানায় ৮টি এবং ঢাকার বাইরে আরও ৩টি মামলা হয়। এরপর র‌্যাব গত বছরের আগস্ট মাসে এজেন্সি মালিককে গ্রেপ্তার করে। প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস জেলে থাকার পর আমাদের হজে নেওয়ার শর্তে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হলফনামা দিয়ে ২০২৪ সালে হজের নিবন্ধন করবেন সেই শর্তে জামিন দেয়। যদি না পারে এক বছরের জরিমানাসহ টাকা ফেরত দেবেন এমন আমরাও তার প্রস্তাবে রাজি হই।

সাজিদ ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এজেন্সির মালিক অহিদুল আলম ভূঁইয়া

 

বেলাল আরও জানান, জেল থেকে বের হওয়ার পর নিবন্ধন করানোর জন্য তার সাথে (এজেন্সি মালিক) নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। কিন্তু তিনি নিবন্ধন না করে আবার আত্মগোপনে চলে গেছেন। তিনি আমাদের ফোন ধরছেন না। মাঝেমধ্যে ফোন দিয়ে তাকে হয়রানি না করার জন্য হুমকি দিয়ে বলেন যে, তাকে হয়রানি করলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। এ নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সঙ্গে যোগাযোগ করলে যেহেতু চূড়ান্ত নিবন্ধন করেনি তাই তারাও কিছু করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। এই অবস্থায় আমাদের চলতি বছরও হজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকার সাজিদ হজ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরস এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। ২০১৬ সালে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ৮৮টি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে শাস্তির আওতায় ছিল ওই সাজিদ হজ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস এজেন্সি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। তাদের হজ করানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী, ধর্ম মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চান তারা।

এনএম/এমএ