ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার আগে আরও দুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ৷ 

হারুন বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতেও তাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল মূল মাস্টার মাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন ও আমানউল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। কিন্তু বার বার তাদের পাতা ফাঁদে পা না দেওয়ায় বেঁচে যান সংসদ সদস্য আনার। 

শনিবার (২৫ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

হারুন অর রশীদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের মদদদাতা আক্তারুজ্জামান শাহীন গত ৩০ এপ্রিল কলকাতায় তিনজনকে নিয়ে যান। সেই দলে একজন নারীও ছিলেন। কিলিং মিশন বাস্তবায়নে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভুঁইয়াকে বুঝিয়ে দিয়ে শাহীন ১০ মে পর্যন্ত কলকাতায় অবস্থান করে দেশের চলে আসেন। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে আমরা বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছি। যেহেতু ভারতীয় পুলিশ আমাদের এখানে কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হলে আমরাও কলকাতায় চলে যাবো। 

কি কারণে এমপিকে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, এই হত্যার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। কি কারণে হত্যা সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হত্যার মূল কারণ উদঘাটনে তদন্ত শেষে বলা যাবে।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, আগেও সংসদ সদস্য আনোয়ারুলকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগেও হত্যার চেষ্টা করেছে। তখন তারা ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয়বার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ১৭ থেকে ১৮ তারিখ সংসদ সদস্য আনোয়ারুল কলকাতায় যান। সেই সময়ে হত্যাকারীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কলকাতায় যায়। কিন্তু হোটেলে থাকার কারণে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তৃতীয় ধাপে তারা সফল হয়। 

হারুন বলেন, হত্যার আগে তাদের পরিকল্পনা ছিল সংসদ সদস্য আনোয়ারুলকে জিম্মি করা। এরপর তার আপত্তিকর ছবি তুলে দুদিন ব্ল্যাকমেইল করে হুন্ডির মাধ্যমে এবং কলকাতায় থাকা তার বন্ধুদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা। আনার কলকাতার ভাড়া করা ওই ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর তার মুখে চেতনানাশক ব্যবহার করায় তিনি জ্ঞান হারান। অজ্ঞান অবস্থায় আনারের আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। কিন্তু তাদের মূল টার্গেট ছিল হত্যা করা। 

সংসদ সদস্য আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে ভারতীয় পুলিশের একটি দল ঢাকায় কাজ করছে। পাশাপাশি আমাদের হাতে গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দুটি বিষয় পেয়েছি। দুটি গ্রুপ এখানে কাজ করেছে। একটি গ্রুপ মদদ দিয়েছে আরেকটি গ্রুপ হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নে কাজ করেছে। 

জেইউ/এমএসএ