ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ১৪ দলকে দলগতভাবে জায়গা না দিলে ঐক্যবদ্ধ থাকা সম্ভব নয়। সংগঠনকে শক্তিশালী করার কথাও বলেছেন জোট নেত্রী শেখ হাসিনা। বাইরের লোক মনে করে আমরা সরকারের সঙ্গে আছি কিন্তু আমাদের কথা সেভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায় না। আমরা আমাদের মতো কথা বলতে চাই, এগিয়ে যেতে চাই। তাহলে ১৪ দলের ভারসাম্য জনগণের কাছে দৃশ্যমান হবে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাতে গণভবনে ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বের হয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যে, আপনারা বিরোধী দল হয়ে যান কিন্তু আমরা অন্তত এই দ্বিচারিতা করি নাই যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভোট করে আবার বিরোধী দলে গিয়ে বসব।

তিনি আরও বলেন, ১৪ দল আমরা একসঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠন করেছি। ২০১৪ সাল পর্যন্ত কার্যকরভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ছিলাম। ২০১৮ সালে এসে দেখলাম ১৪ দলের সরকার হয়ে গেল আওয়ামী লীগের সরকার। তাহলে ১৪ দলের প্রাসঙ্গিকতা আর আওয়ামী লীগের কাছে নাই।

মেনন বলেন, রাজনৈতিকভাবে যখন সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ এসেছিল আমরা ১৪ দল তখন সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। এমনকি ১/১১ এর সময় যখন মাইনাস টু ফর্মুলা এসেছে তখন দাঁড়িয়েছি।

ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি বলেন, দেশে এখন উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছি, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ক্ষুদ্র একটা ধনী গোষ্ঠী, সামরিক-বেসামরিক আমলা গোষ্ঠী তারা এখন সমগ্র অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। আজকে অর্থপাচার নিয়ে যদি না বলি এখন যদি না বলি তাহলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এখন আমরা একটা উচ্চ বৈষম্যের দেশে পরিণত হয়েছি। এখন বৈষম্যের বিচারে ৪.৯৯, যেখানে আগে ২.২ পয়েন্ট ছিল। আরেক পয়েন্ট বাড়লেই আমরা উচ্চ বৈষম্যের দেশে চলে যাব।

মেনন বলেন, হেফাজতের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এখন দেখা যাচ্ছে হেফাজত আওয়ামী লীগের মধ্যে চলে আসছে, আমাদের শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হচ্ছে। প্রাইমারি স্কুল থেকে ছেলে-মেয়ে মাদ্রাসায় চলে যাচ্ছে। সমাজে যাত্রাগান থেকে শুরু করে বাউলগান, লালনগীতি পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়ে যাচ্ছে। আজকে এই পর্যন্ত সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার হচ্ছে।

মেনন বলেন, ১৪ দল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই করছে। এখন ইনু সাহেব আগায়া আসছেন ঠিকই, কিন্তু এদের মাথা থেকে লেনিনের ব্যাপারটা যায়নি।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন,শেখ হাসিনা নিজেই আজকের বৈঠকে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘাঁটি গড়তে চায় বলে জানিয়েছেন। আমরা তাদের সেই প্রস্তাবে রাজি নই। এটা প্রধানমন্ত্রীর কথা আমাদের না।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন সম্পর্কেও আমরা স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছি, ১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল রাজশাহীতে কিন্তু এবার ২০২৪ সালের নির্বাচনে এসে দেখলাম আওয়ামী লীগ নৌকার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই করলো।

তিনি আরও বলেন, হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতারা দাঁড়িয়ে তাকে হারানোর ব্যবস্থা করেছে,মাইজভান্ডারির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে ১৪ দলের নেতাদের যদি পাশে না নেন তাহলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম এবং ঐক্যবদ্ধ থেকেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।

এমএসআই/এমজে