ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এমপি আনার এই সমিতির সহ-সভাপতি ছিলেন।

বুধবার (২২ মে) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহর শোক বার্তায় এই শোক জানানো হয়। এতে সমিতির পক্ষে আরও শোক জানান সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা ও কার্যকরী সভাপতি হাজী আলাউদ্দিন।

শোক বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও কালিগঞ্জ মটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মো. আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতের কলকাতা নিউ টাউন এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন। তার আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদে গভীর শোক ও সমবেদনা এবং এই হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

আরও বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত খুনিদের অতি শিগগিরই গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ভারতের পশ্চিবঙ্গে যান এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। ১৬ মে দিল্লি যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের আটদিন পর কলকাতার একটি এলাকায় এমপি আনার খুন হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে ভারতীয় ইংরেজি সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার যে ফ্লাটে এমপি আনার খুন হয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে, সেখানে তার মরদেহ পাওয়া যায়নি। 

বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রের বরাত দিয়ে এবিপি আনন্দ জানিয়েছে, তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতীয় ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়া টুডে বলছে, এমপি আনার গত ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরের দিন, ১৩ মে চিকিৎসক দেখাতে হবে জানিয়ে দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে গোপালের বাড়ি থেকে বের হন আনোয়ারুল। সন্ধ্যায় ফিরবেন বলেও জানান তিনি। পরে বিধান পার্কের কাছে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন তিনি।

চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যায় এমপি আনার তার বন্ধু গোপালকে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। পরে তার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন জানিয়ে বন্ধু গোপালকে ফোন না দেওয়ার জন্য সতর্ক করে দিয়েছিলেন।

গত ১৫ মে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় এমপি আনার গোপালকে বলেন, তিনি দিল্লি পৌঁছেছেন এবং ভিআইপিদের সঙ্গে আছেন। তাকে ফোন করার দরকার নেই। একই বার্তা পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশে তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও।

১৭ মে আনারের পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে গোপালকে ফোন করেন। ওই সময় তারা গোপালকে বলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিনই ঢাকায় থানায় অভিযোগ করা হয়। এরপর থেকে এমপি আনারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। 

এদিকে, এমপি আনারের খুনের ঘটনায় বাংলাদেশে তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

ভারতের পুলিশের একটি সূত্র ইন্ডিয়া টুডেকে বলেছে, বাংলাদেশে আটকদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাংলাদেশ পুলিশের কাছে এমপি আনারকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। কলকাতার পুলিশ কর্তৃপক্ষকেও একই কথা জানানো হয়েছে। 

এমএইচএন/কেএ