• দুই দিনে হজে গেলেন ৬ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী

গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে চলতি বছরের পবিত্র হজের ফ্লাইট শুরু হয়েছে। শেষ ফ্লাইট যাবে আগামী ১২ জুন। অথচ এখনও ভিসা পায়নি ৩২ হাজারের বেশি হজযাত্রী। আজ (১১ মে) শেষ হচ্ছে ভিসা আবেদনের দ্বিতীয় দফার বর্ধিত সময়। অর্থাৎ শেষ দিনে ভিসা দিকে তাকিয়ে আছেন এই বিশাল সংখ্যক হজযাত্রী। যদিও ফের ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত করেছে এমন ৩২ হাজারের বেশি হজযাত্রীর এখনো ভিসা হয়নি। ১১ মে পর্যন্ত ভিসা আবেদনের সময় রয়েছে। এর মধ্যে ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে না পারলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে বলে আগেই জানিয়ছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। যদিও আবেদনের সময় আবার বাড়াতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ৮৩ হাজার ২১৮ জন হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৩২৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন পবিত্র হজ পালনের জন্য নিবন্ধন করেছেন। শনিবার ( ১১ মে) পর্যন্ত হজে যেতে ভিসা পেয়েছেন ৫০ হাজার ৪৯২ হজযাত্রী। অর্থাৎ ৩২ হাজার ৭২৬ জনের এখনো ভিসা হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও হজ এজেন্সিগুলো সৌদি আরবে মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে গাফিলতি করেছে। কম রেটে বাড়ি ভাড়া করার জন্য শেষ সময়ে এসে অপেক্ষা করছে। এছাড়া হজ এজেন্সিগুলোর বাড়ি ভাড়ার জন্য নির্ধারিত প্রতিনিধি মোনাজ্জেমদের ভিসা আটকে দেয় সৌদি সরকার। সেই ভিসার জট খুলতে দেরি হওয়ায় অনেক ইচ্ছা থাকার পরও বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। এতে হজযাত্রীর ভিসা আবেদন করতে পারেনি এজেন্সিগুলো। কারণ হজ ভিসা আবেদনের পূবশর্ত হলো সৌদিতে হজযাত্রীর বিপরীতে বাড়ি বাড়ার চুক্তি থাকতে হবে। বাড়ি ভাড়া না করলে ভিসা আবেদন করা যায় না।

বিপুল সংখ্যক হজযাত্রীর ভিসা না হওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেছেন, এখনো অনেক হজ এজেন্সি মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। এছাড়া বেশকিছু কাজ এখনো বাকি রয়েছে। যার ফলে ভিসা করা সম্ভব হয়নি।

দুই দিনে সৌদি গেলেন ৬ হাজার ৩৯২জন

এদিকে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে সৌদি আরব গেছেন ৬ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার (প্রথম দিন) পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সাতটি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ২ হাজার ৭৬৯ জন যাত্রী। শুক্রবার (দ্বিতীয় দিন) ৯টি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ৩ হাজার ৬২৩ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সে চারটি ফ্লাইটে ১ হাজার ৬৬৮ জন, সৌদি এয়ারলাইন্সের ১টি ফ্লাইটে ৪৪৫ জন, ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সে চারটি ফ্লাইটে ১ হাজার ৫১০ জন সৌদি আরব গেছেন। দুই দিনে তিন বিমান সংস্থার ১৬টি ফ্লাইটে ৬ হাজার ৩৯২ হজযাত্রী ঢাকা ছেড়েছেন।

বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কোনো অভিযোগ ছাড়াই যাত্রীরা ঢাকা ত্যাগ করছেন।

এদিকে বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে যাদের ভিসা হয়নি তারা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। যদিও ধর্মমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন ভিসা নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে। ২৫৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সির অনেকেই প্রথম দফার বর্ধিত সময়ের মধ্যে ভিসার কার্যক্রম শেষ না করায় ২য় দফা সময় বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের সচিব মো. মতিউল ইসলাম বলেন, চলতি বছর হজযাত্রীদের ভিসা আবেদনের দ্বিতীয় দফার সময় শেষ হচ্ছে শনিবার। তবে আজ যেসব হজযাত্রী ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে না তাদের জন্য তৃতীয় দফা সময় বাড়ানোর জন্য সৌদি সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভিসা সহজ করতে দ্বিগুণ হলো প্রতিস্থাপন কোটা

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী মারা গেলে কিংবা গুরুতর অসুস্থ হলে তার বদলি হিসেবে অন্য কাউকে হজ করার বিধান রয়েছে। যাকে রিপ্লেসমেন্ট (প্রতিস্থাপন) কোটা বলা হয়। সেই কোটা ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করল ধর্ম মন্ত্রণালয়।

ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, চলতি বছরে হজের ভিসা নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিস্থাপন কোটা ২০ শতাংশ করা হয়েছে। শেষ সময়ে যারা নানা কারণে ভিসার আবেদন করতে পারছে না তাদের বদলে অন্যদের প্রতিস্থাপন করা যাবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজযাত্রী হজ পালন করবেন। ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। এর আগে ৮ মে চলতি বছরের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এনএম/এসএম