সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করেছে বন অধিদপ্তর। সোমবার (৬ মে) বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর স্বাক্ষরে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো-কে সভাপতি এবং খুলনার ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ, বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. এস.এম ফিরোজ, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ম্যানগ্রোভ ইকোলজিস্ট ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেটের প্রফেসর ড. স্বপন কুমার সরকার এবং ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির প্রতিনিধি।

কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে বনজসম্পদ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়ন করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 

এদিকে, সুন্দরবনে বনাঞ্চলের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর যেসব স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ছোট পরিসরে আগুন ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল গতকাল সারা রাত বন কর্মীরা দলভিত্তিক নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুপমেন্টের মাধ্যমে সব স্থানের আগুনই নিভিয়ে ফেলেছেন বলে জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। 

মন্ত্রণালয় বলছে, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বন বিভাগের পক্ষ থেকে এখন ড্রোনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে। ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আজ তিনবার আগুনের ধোঁয়া শনাক্ত করে তা দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়েছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে বর্গকিলোমিটার এলাকার অগ্নিকাণ্ডের কথা বলা হলেও প্রকৃত পক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপ্তি ছিল ৭.৯ একর, যার মধ্যে ৫ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, দাবি মন্ত্রণালয়ের। 

বনের আগুনের ক্ষেত্রে মাটির গভীরে গাছের শিকড়ের মধ্যেও আগুন থেকে যায়, যা পরে কয়েক ঘণ্টার পরে পুনরায় আগুনের বা ধোঁয়ার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। সেজন্য যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে আজ থেকে আগামী তিন দিন পর্যন্ত ঘটনাস্থলে বন বিভাগের টহল দল আগুন মনিটরিং এবং কোন স্থানে নতুন কোন আগুনের সূত্রপাত ঘটলে তা নিভিয়ে ফেলার জন্য দায়িত্বরত থাকবেন।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণ দায়িত্বরত আছেন। ফায়ার সার্ভিসের টিম আগামীকালও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকবেন। আগুন নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাওয়ায় কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন। 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরি, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন। 

এসএইচআর/জেডএস