তীব্র দাবদাহের কারণে ওরস্যালাইনের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি চক্র রাজধানীতে তৈরি করছিল নকল ওরস্যালাইন। চিনি ও লবণ মিশিয়ে হুবহু প্যাকেট নকল করে এসএমসির আদলে বাজারজাত করছিল এনএমসি নামের ওরস্যালাইন।

এমন একটি চক্রের তিন সদস্যকে রাজধানীর মতিঝিল থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন– সজিব মিয়া (২০), মো. রিয়াদ (২১) ও সামসুল আলম (৬৫)। এ চক্রের আরেক সদস্য পলাতক রয়েছেন। তার নাম সাখাওয়াত হোসেন ভূইয়া (৬৫)।

শনিবার (৪ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চক্রটি বাজার থেকে চিনি, লবণ কিনে তা প্যাকেটজাত করে মানুষের কাছে বিলি ও বিক্রি করছিল। যেহেতু মানুষের স্যালাইন দরকার, তারা তা কিনে গ্রামে পাঠাচ্ছিলেন। আমরা চক্রটির চার জনের মধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছি। অপরজনকেও গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। তারা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে তারা এসব নকল তৈরি করছিল।

হারুন অর রশীদ বলেন, চক্রটি এসএমসি ওরস্যালাইন ব্র্যান্ডকে নকল করে এনএমসি লিখে মোড়ক বানাত। তাদের কাছ থেকে ২ হাজার ৮০০ প্যাকেট নকল স্যালাইন উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া সাত কার্টন টেস্টি স্যালাইন উদ্ধার করা হয়েছে। এসব স্যালাইন তারা কোথায় কোথায় দিয়েছে, কোন ফার্মেসিতে বিক্রি করেছে তা জানার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, চক্রটি মানবতার ফেরিওয়ালা সেজে এসব নকল স্যালাইন বিক্রি করছিল। আবার যারা আসল মানবতার সেবক তারাও তাদের কাছ থেকে কিনছে। তারা ঢাকাসহ ঢাকার বাইরে খেটে খাওয়া মানুষজনের মধ্যে বিতরণ করেছে এসব নকল স্যালাইন। মানুষও এগুলো খাচ্ছে।

ডিবি প্রধান বলেন, মানুষ সাধারণত পানি শূন্যতায় ভোগে। তখন স্যালাইন খায়। এই নকল স্যালাইন খাওয়ার পর ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি হয়। কিডনি, হার্ট, লিভারের সমস্যা বেড়ে যায়। এমনকি ব্রেন ড্যামেজও হতে পার বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, এসএমসি ওরস্যালাইন বাজারজাত করে থাকে সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি)। জনপ্রিয় ও বহুল পরিচিত এ ওরস্যালাইনের আদলে অসাধু চক্রটি ক্রেতাদের ধোঁকা দেওয়ার কৌশল হিসেবে এনএমসি ওরস্যালাইন নামে বাজারজাত করছিল। এনএমসি মানে সোশ্যাল ন্যাশনাল কোম্পানি। এ নামে কোনো নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান নেই।

জেইউ/এসএসএইচ