গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি
গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানিয়েছে গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার।
বুধবার (১ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিলে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের সভাপতি সুলতানা বেগমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, সহ-সভাপতি মিসেস সুইটি, সেলিনা হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা আক্তার সুমি, নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমরিন হোসাইন এ্যানি।
আরও বক্তব্য রাখেন দপ্তর সম্পাদক রাবেয়া ইসলাম, আশুলিয়া থানা কমিটির সভাপতি ইউসুফ শেখ, আঞ্চলিক কমিটির মো. তাহেরুল ইসলাম, মো. সুমন হোসেন মোল্লা, মিস্টার শেখ, মো. ফারুক হোসেন, নাসরিন আক্তার, শাবনুর, অঞ্জলী, স্বপ্না আক্তার, নুরজাহান, জোসনা বেগম, সালমা বেগম, রোকসানা ও আমেনাসহ অনেকে।
আরও পড়ুন
সভাপতির বক্তব্য ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতানা বেগম বলেন, বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক দিন আজ। শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনে সারা বিশ্বে একযোগে ‘মহান মে দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমজীবী মানুষ নিপীড়নের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলেন দুর্বার আন্দোলন। আমাদের দেশে এখনো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কর্মঘণ্টা ও নিরাপদ কর্মস্থলের জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, একজন নারী শ্রমিক শ্রম আইন অনুযায়ী সব অধিকারের সমান অংশীদার হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। নারী শ্রমিক অধ্যুষিত গার্মেন্টস ও অন্যান্য ক্ষুদ্র শিল্প ও অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টরে স্বল্প মজুরি, খণ্ডকালীন নিয়োগ, যখন তখন ছাঁটাই ও অধিক শ্রমঘণ্টায় কাজ করানো হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নারী শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র থেকে সাপ্তাহিক ছুটি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পায় না।
সমাবেশে নেতারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু হলে বা কোনো শ্রমিক গুরুতর আহত বা পঙ্গু হলে তাদের পরিবার পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়ে। কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত বা গুরুতর আহত হয়ে কর্মক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট হলে, আইএলও কনভেনশন ১২১ মানদণ্ড অনুযায়ী তাকে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, কাজে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে।
সংগঠনের নেতাদের দাবি, শ্রমিক কর্মচারী বা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিশেষ করে গার্মেন্টস, নির্মাণ, পরিবহন, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, চা শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক, হকার, চাতাল, ওয়েল্ডিং, গৃহ শ্রমিক, বিউটি পার্লার, হিজরা ও অটো রাইস মিল শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি সরবরাহ করতে হবে। এই সংকট নিরসনের জন্য বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করা আজ অত্যন্ত জরুরি।
শ্রমজীবীদের দাবি
গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা, ২০২৩ সালে ঘোষিত মজুরি বাস্তবায়ন করা, সকল শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা, ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির আইন করা, জাতীয় বাজেটে শ্রমিকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ, আইএলও কনভেনশন ১০২, ১৮৯ ও ১৯০ অনুস্বাক্ষর করা, শ্রমিক স্বার্থবিরোধী কালো আইন বাতিল করা, নিরাপদ কর্মস্থল ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা, আউটসোর্সিং প্রথা ও ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ করা, অবিলম্বে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি কমিশন গঠন করা।
পিএইচ