গরমের মধ্যে ডিউটি, হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক কোণায় স্ট্রেচারে রাখা আছে সেলিম উদ্দিনের মরদেহ। স্ট্রেচারে রাখা মরদেহে মাথা বরাবর নিচে মেঝেতে রয়েছে রক্তের দাগ। বাবার নিথর শরীরের পাশে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছে ছেলে সাজ্জাদ ও তৌহিদ। এর একটু পর বড় ছেলে আরিফও এলেন বাবার মৃত্যুর খবরে। বড় ভাইকে দেখে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায় সাজ্জাদ ও তৌহিদের। তাদের কান্নায় নিস্তব্ধ হয়ে যায় মেডিকেলের জরুরি বিভাগ। এর একটু পর সেলিমের স্ত্রী রেহেনা ও ছোট মেয়ের বিলাপে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ।
সেলিম উদ্দিন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেনে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মিলিনিয়াম সার্টিজ সিকিউরিটিজের মাধ্যমে এ ইউনিভার্সিটিতে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মিলিনিয়াম সার্টিজ সিকিউরিটিজের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুর দুইটায় কাজে যোগ দেন সেলিম। গরমে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যান। পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। সে সময় সেখানে একজন কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে জানতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইমেনে সেলিমের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করা তার কোনো এক সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার জন্য মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা জানতে চায় ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেকদক। তবে ওই কর্মকর্তা তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, পরিবার নিয়ে বায়েজিদের আরেফীন নগর এলাকায় থাকতেন নিরাপত্তারক্ষী সেলিম। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে।
মেডিকেলে আসা স্বজনরা বলেন, আহত অবস্থায় সেলিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় গরমও বেশি ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হিট স্ট্রোক করেছেন।
সেলিমের ছেলে সাজ্জাদ বলেন, সেখানে আমরা কেউ ছিলাম না। শুনেছি আমার বাবা মাথা ঘুরে পড়ে যান। সেখানে মাথায় আঘাত পান। এরপর অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তার মরদেহ কক্সবাজারে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে বলে জানান ছেলে সাজ্জাদ।
এদিকে, চিকিৎসকের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে সেলিমকে হাসপাতালে আনার পথে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় সিনহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমন কোনো ঘটনা আমাদের জানা নেই। মেডিকেল থেকেও বলা হয়নি।
কেএ