যাত্রী কল্যাণ সমিতি
জিডি করে পরিবহন চাঁদাবাজরা সরকারের আস্থাভাজন হতে চায়
‘সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ২০ বছর যাবত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেননি’— এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংগঠনটি বলছে, মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে জিডি করে পরিবহন চাঁদাবাজরা সরকারের আস্থাভাজন হতে চায়।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমে সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক মাহামুদুল হাসান রাসেলের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিটি যৌথভাবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম. হারুন অর রশিদ, সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম-মহাসচিব এম. মনিরুল হক পাঠান।
বিবৃতিতে বলা হয়, পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি জিইয়ে রেখে যারা ফায়দাতন্ত্র হাসিল করতে চায় এ ধরনের কতিপয় শ্রমিকনেতা সরকারের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা-হামলার হুমকি দিচ্ছে।
গণতান্ত্রিক সরকারের মন্ত্রীরা কি সমালোচনার ঊর্ধ্বে? সরকারের দায়িত্বে থাকলে গঠনমূলক সমালোচনা করা নাগরিক অধিকারের অংশ। গত ২০ এপ্রিল সকালে নগরীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ২০২৪’ প্রকাশকালে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছিলেন, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘসময়ের মন্ত্রী, টানা চতুর্থ মেয়াদে তাঁর দায়িত্ব পালন শেষ হলে ইতিহাস কথা বলবে, টানা ২০ বছর তিনি দায়িত্ব পালন করে সড়কে সম্পূর্ণ শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি, যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে পারেননি। একজন নাগরিক অধিকার কর্মী হিসেবে বা সাধারণ নাগরিক হিসেবে এ ধরনের সমালোচনা করার অধিকার কি আমাদের নেই?
মন্ত্রী বা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা বা ভুলত্রুটি তুলে ধরাকে যারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোঁজেন, তারা তেলবাজি করে সরকারকে ভুল পথে পরিচালিত করতে চাই কি না, নানান মহলে এমন প্রশ্ন উঠেছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর সম্মানহানির অভিযোগে নগরীর শাহবাগ থানায় জিডির বাদী কথিত শ্রমিকনেতা হানিফ খোকন দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নানান অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এখন তিনি সরকারের আস্থাভাজন হওয়ার লক্ষ্যে মন্ত্রীর সম্মানহানি ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী বলে যাত্রী কল্যাণ সমিতিকে সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যাত্রী কল্যাণ সমিতি দীর্ঘদিন যাবত দেশের যাত্রী সাধারণের অধিকার, যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নানান দাবি নিয়ে রাজপথে সোচ্চার। আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য মন্ত্রী বা সরকারের পদত্যাগ নয়। বরং সরকারের পরিবহন সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দায়িত্বশীল করা এবং জবাবদিহিতার আওতায় আনতে সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করা।
এমএইচএন/এসকেডি