চট্টগ্রামে পেনশন স্কিমের আওতায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষ
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, সব নাগরিকের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম ব্যবস্থা চালু করেছে। এটি বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এখন পর্যন্ত এ জেলায় সাড়ে ৯ হাজার ব্যক্তি পেনশন স্কিমের আওতায় এসেছে।
তিনি বলেন, পেনশন স্কিম নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে গড়ে উঠার জন্য এটির কোনো বিকল্প নেই। অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ১৮-৫০ বছর বয়সী সকল বাংলাদেশি নাগরিক এই পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবে। তবে বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ নাগরিকগণ ১০ বছর নিরবচ্ছিন্ন জমা প্রদান করলে পেনশন সুবিধা পাবেন।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২৩ এপ্রিল) নগরের আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের আয়োজিত ‘ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সচেতনতা ও স্পট রেজিস্ট্রেশন’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এ সভার আয়োজন করেন।
ডিসি ফখরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এটি একটি রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি। সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আপাতত চার ধরনের স্কিম চালু করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রবাসীদের জন্য প্রবাস স্কিম, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি স্কিম, অনানুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রয়েছে সমতা স্কিম।
তিনি বলেন, প্রবাসীরা প্রবাস থেকে অনলাইনে পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং তার নমিনির আইডি কার্ড ও ছবি দিয়ে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সদস্য হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। দেশে অবস্থানরত ১৮-৬০ বছর বয়সী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে পেনশন স্কিমের সদস্য হতে পারবেন। ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর গ্রাহক যত বছর বেঁচে থাকবেন তত বছর পেনশন পাবেন এবং ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার নমিনি ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন এবং ৬০ বছরের আগে মারা গেলে তার নমিনি মুনাফাসহ টাকাটা ফেরত পাবেন। জমা টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ লোন পাবেন।
তিনি আরও বলেন, বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক তার অভিপ্রায় অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের শর্তে নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান পূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করলে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করাসহ প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক নির্ধারিত চাঁদা প্রদান পূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সব অনানুষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদান করে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনযোগ্য বয়সে উপনীত হলে চাঁদাদাতা আজীবন পেনশন ভোগ করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সদস্য হলে ভবিষ্যতে আর কারও উপর নির্ভরশীল হতে হবে না। যে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা যতটা সুরক্ষিত সে দেশের মাপকাঠি ততটা উন্নত। মানুষ নিজের চেষ্টায় যেটা পারে না, রাষ্ট্র যদি সে নিরাপত্তা দেয় সেটাই সামাজিক সুরক্ষা।
দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. সাদি-উর রহিম জাদিদ, চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক, অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন, অঞ্জন শেখর দাশ ও আকতার পারভেজ।
এমআর/এমজে