দেশব্যাপী চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ; প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। তৃষ্ণা মেটাতে বারবার পানি কিংবা কোমল পানীয় পান করছেন সবাই। সাধারণত গরম এলে ডাবের পানির চাহিদা থাকে অনেক। কিন্তু এবার অসহ্য গরমেও ডাবের চাহিদা কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। ডাবের দাম বেশি হওয়ার কারণে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা। পাশাপাশি ক্রেতারা বলছেন, ডাব এখন বিলাসী পণ্যে রূপ নিয়েছে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ডাব কিনছেন না কেউ।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ধানমন্ডি ১৫, ধানমন্ডি শংকর, মোহাম্মদপুর ও রায়েরবাজার এলাকায় ডাব ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। এ সময় ডাবের ক্রেতা তেমন একটা দেখা যায়নি। হাতেগোনা কয়েকজনকে দেখা গেলেও দামে বনিবনা না হওয়ায় অনেককেই ফিরে যেতে দেখা যায়। 

বড় আকারের ডাবের দাম রাখা হচ্ছে ১৫০ টাকা। ছোট আকারের ডাব কিনতে গেলেও গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা বা তারও বেশি। কিছু কিছু জায়গায় ছোট ডাবের দাম ৯০ টাকা রাখা হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে ডাবের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে।

ডাব বিক্রেতা জুয়েল আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা রায়েরবাজার সাদেক খান মার্কেট থেকে ডাব কিনে নিয়ে আসি। গরমে ক্রেতা না থাকলেও আমাদের কিনে আনতে হচ্ছে বেশি দাম দিয়ে। ৭০ থেকে ৮০ টাকায় ডাব কিনে ১০০ টাকা বিক্রি করছি। 

তিনি বলেন, প্রতিদিন ১০০ পিস ডাব নিয়ে মার্কেটে আসি। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত পায় ৪০টি ডাব বিক্রি করতে পেরেছি। এখনো ৬০টির মতো ডাব বিক্রি বাকি রয়েছে। চাহিদা থাকলে এতক্ষণ সবগুলো বিক্রি হয়ে যেত। তাপপ্রবাহে মানুষ কষ্ট ভোগ করছে, তবুও ডাবের পানি খাচ্ছে না। এই গরমে ডাব না খেলে কখন খাবে? হয়ত বেশি দামের কারণে বিক্রি কম হচ্ছে। 

রায়েরবাজার এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, অধিকাংশ ডাবের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে। বড় আকারের ডাব (আধা লিটারের মতো পানি আছে বলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ধারণা) বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। ছোট আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। দরদাম করলে কোথাও কোথাও একটু কম রাখছেন বিক্রেতা।

ধানমন্ডি ১৫ নম্বরে ডাবের ক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড গরমে ডাবের পানি কিছুটা স্বস্তি দেয়। কিন্তু ছোট ডাবের দামও ১০০ টাকা। দুই গ্লাস পানিও হবে না, তাও একশ টাকা। বাধ্য হয়েই কিনতে হচ্ছে। 

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বড় ডাব ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডাব এখন বিলাসী পণ্যে রূপ নিয়েছে। ডাব এখন বড় লোকের হাতে শোভা পায়। ডাব আসলে আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য না। 

এমএসআই/কেএ