স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে ক্রেতা-বিক্রেতার অনীহা
মিরপুর ১ নম্বর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের সামনে ফুটপাতে শিশুদের প্যান্ট-শার্ট নিয়ে বসেছেন আসাদ ইসলাম। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল তার দোকান। গত তিন দিন ধরে কয়েক ঘণ্টার জন্য দোকান খোলা রাখছেন তিনি। কিন্তু দোকানে আসা অধিকাংশ ক্রেতাকে স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করতে দেখা যায়নি। এমনকি আসাদ ইসলামও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীন। সাধারণ জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করার মতো প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের পণ্য নিয়ে বসেছেন। সকাল থেকেই ক্রেতারা আসছেন। পছন্দ অনুযায়ী প্যান্ট, শার্টসহ নানা ধরনের পণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। বজায় থাকেনি সামাজিক দূরত্ব।
বিজ্ঞাপন
ফুটপাথের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতরের বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে ঝুঁকি নিয়েই দোকান খুলেছেন। কারণ বছরের এ একটা সময়ই ভালো বেচাকেনা হয়। এখন যদি রোজগার করা না যায় তাহলে পুরো বছরই কষ্ট করে পার করতে হবে তাদের।
ফুটপাথের ব্যবসায়ী আসাদ ইসলাম বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অনেকদিন বন্ধ ছিল সবকিছু। এখন কয়েক ঘণ্টার জন্য খুলে দিয়েছে। সামনে ঈদ, এমন সময় ক্রেতাদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা থাকত না। কিন্তু এখন ক্রেতা খুব কম। সকালে তো ক্রেতাই ছিল না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতার উপস্থিতি বাড়ছে। হয়তো বিকেলে আরও চাপ বাড়বে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের ব্যবসা করতে বলেছে সরকার। কিন্তু ক্রেতারা এ নিয়ম মানছেন না। তাদের আমরা বললেও অনেকেই দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করেন না।
আপনি মাস্ক ঠিকমতো কেন পরেননি? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মুখে মাস্ক নিয়ে কথা বললে ক্রেতারা বুঝতে পারেন না। তাই নামিয়ে রাখছি। তবে কথা না বললে মুখে মাস্ক লাগানো থাকে।
রবিউল নামে এক ক্রেতা বলেন, করোনার কারণে এবার ঈদে কেনাকাটা করার মতো টাকা নেই। তারপরও ছোট ছেলেকে একটা শার্ট আর প্যান্ট কিনে দেওয়ার জন্য এসেছি।
তিনি বলেন, করোনার ভয়ে এত দিন বাসায় ছিলাম। কাজ না থাকায় এক প্রকার না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। কেউতো একটু সাহায্য করতে আসেনি। তাই এতো করোনা করোনা করে জীবন চলবে না। আমাদের খেয়ে বাঁচতে হবে।
বিক্রেতা মহসিন বলেন, মানুষের কাছে টাকা নেই, কেনাকাটা করবে কীভাবে? আবার কেনাকাটা না করলে এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চলবে কীভাবে? করোনার ভয়ে মানুষজন ঘর থেকে বের হতে চাচ্ছে না। সেজন্য ক্রেতাও কম।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রামণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। তবে শর্তসাপেক্ষে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার।
এসআর/এসকেডি