অভিযানের খবরে নিজেরাই সরিয়ে নিচ্ছে দোকানের মালামাল
দীর্ঘদিন যানজটের কবলে থাকা মুগদা থেকে মাণ্ডা যাওয়ার সড়ক বড় করার লক্ষ্যে দুই পাশের দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। অভিযান শুরু পর দোকানপাট ভাঙার খবর পেয়ে অন্যান্য দোকানিরা নিজেরাই তাদের দোকানের মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) যৌথ উদ্যোগে এটি করা হচ্ছে।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে মুগদা ব্রিজের সামনে থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে। অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়লে মুগদা মাণ্ডা ব্রিজ থেকে মুগদা প্রধান সড়কের আগ পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের দোকানগুলোতে নিজ উদ্যোগে মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। আর অভিযানে শুরুতেই বেশ কিছু দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছে। এদিকে প্রধান সড়কের সামনে থেকে অভিযান পরিচালনাকারী দল মাইকিং করে মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন।
বিজ্ঞাপন
রাস্তার পাশের নূর ফার্মেসির মালিক নূর মোহাম্মদ বলেন, ব্রিজের দিকে দেখে এসেছি অভিযান চালিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে দোকানগুলো তাই আমরা নিজ উদ্যোগেই সব মালামাল সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। যেন দোকান ভাঙলেও মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদিও আগে তারা নোটিশ দিয়েছে অনেককে, তবে আমরা বুঝতে পারিনি আজ তারা সত্যিই এসে সব ভেঙে দেবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়ক সংকীর্ণ অবস্থায় ছিল, ফলে দিনরাত সবসময়ই দীর্ঘ যানজট লেগে থাকত। রাস্তাকে বড় করার স্বার্থে রাস্তার দুই পাশের দোকানগুলোর কিছু অংশ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। কর্পোরেশনের এ অভিযানে সহযোগিতা করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এসব দোকান মালিকদের একাধিকবার এ বিষয়ে জানানো হয়েছে, বলা হয়েছে। এরপরে আমরা অভিযান শুরু করেছি। আজকের অভিযান মাণ্ডা ব্রিজ থেকে মুগদা প্রধান সড়কের দিকে রাস্তার দুপাশে পরিচালিত হবে।
অন্যদিকে ক্ষতিপূরণ ছাড়া দোকানগুলোর না ভাঙতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেছিল এলাকাবাসীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, মুগদা এলাকার প্রধান সড়কের দুই পাশের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে নিজস্ব জমিতে আমাদের পূর্বপুরুষরা এবং আমরা রাজউকের অনুমোদন নিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছি। মুগদা প্রধান সড়কটি সর্বশেষ ঢাকা সিটি জরিপ অনুযায়ী ৩০ ফুট প্রশস্ত। সম্প্রতি রাজউকের নোটিশের মাধ্যমে জানতে পারি এ সড়ক এটি ৫০ ফুট বা ৬০ ফুট প্রশস্ত করা হবে। নকশা চেয়ে রাজউক থেকে আমাদের অনেককে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আবার অনেকে নোটিশ পায়নি।
তারা বলছে, রাজউকের লোকজন জানিয়েছে, আমাদের জায়গাসহ বাড়িঘর শিগগিরই ভেঙে ফেলে সড়ক নির্মাণ করবে। কিন্তু তারা জমিগুলো এখনো আইনিভাবে অধিগ্রহণ করেনি। তাদের পক্ষ থেকে আমাদের জমি কী পরিমাণ অধিগ্রহণ করা হবে তা-ও জানায়নি বা জমি বা জমির ওপর স্থাপিত বিল্ডিং বা বাড়ির ক্ষতিপূরণ কী দেওয়া হবে তা-ও জানায়নি। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে আজ (রোববার) সড়কের আশপাশের সব স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে।
এএসএস/এমএ