চার জেলায় নারী ও শিশুকে ধর্ষণ, জড়িতদের শাস্তি চায় মহিলা পরিষদ
চার জেলায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসা নির্যাতন ও নিপীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
মহিলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার সরসপুর গ্রামে এক নৃত্যশিল্পীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর গ্রামে কিশোরীকে ধর্ষণ এবং সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার সরসপুর গ্রামে এক নৃত্যশিল্পীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
গত শুক্রবার (১২ এপ্রিল) এক বিয়ের অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করতে আসেন ওই নৃত্যশিল্পী। অনুষ্ঠান শেষে রাতে ফকিরহাটে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ওই নারী ও তার স্বামীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে রওনা দেয় কয়েকজন যুবক।
যুবকরা ওই নারী ও তার স্বামীকে ভুল বুঝিয়ে অন্য সড়কে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা ওই নৃত্যশিল্পীকে ঘাটবিলা এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের জমিতে থাকা পরিত্যক্ত টিনশেডের ঘরে নিয়ে গিয়ে তাকে পালাক্রমে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
অন্যদিকে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায়ও গত ১১ এপ্রিল অভিযুক্ত এমদাদুল বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই কিশোরীকে নিকটবর্তী জনৈক মোক্তারের মুদি দোকান থেকে কোমল পানীয় জাতীয় জিনিস কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। নির্যাতনের শিকার কিশোরীর কান্নায় আশেপাশের লোকজন চলে আসলে এমদাদুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
অপরদিকে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর গ্রামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত নাহিদ হোসেন কৌশলে ওই কিশোরীর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে।
প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গত ১৫ এপ্রিল নির্যাতনের শিকার ছাত্রী নিজ বাসার গোয়ালঘর পরিষ্কার করছিল। এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় এ সুযোগে রাসেল ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধরে ঘরের ভিতর নিয়ে যেয়ে ধর্ষণ করে। ছাত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘরে এলে রাসেল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে মহিলা পরিষদ জানায়, আমরা লক্ষ্য করছি, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারী ও কন্যাশিশুরা ঘরে-বাইরে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণের মত সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতার ঘটনায় নারী-কন্যাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ও তাদের নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের ঘটনা নারী-কন্যাদের যেমন কর্মক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করছে তেমনি তাদের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহিলা পরিষদ এই চারটি পৃথক ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। সেইসাথে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছে।
জেইউ