হেপাবিগ ভ্যাকসিন নামের ইনজেকশন ব্যবহৃত হয় হেপাটাইটিস বি রোগ প্রতিরোধের জন্য। দেশের বাজারে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা দামের কোরিয়ান এই ভ্যাকসিনটি কেরানীগঞ্জে তৈরি করে আসছিল একটি চক্র।

গুরুত্বপূর্ণ এই ওষুধটি নকল করে বাজারে বিক্রির দায়ে রাজধানীর কোতোয়ালি ও কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. আনোয়ার হোসেন (৪৪), অসিম ঘোষ (৪৬), মো. মশিউর রহমান ওরফে মিঠু (৩৮) ও নূরনবী (৩৫)।

ডিবি জানায়, শুধু হেপাবিগ নয়, এই চক্রটি তৈরি করতো নকল ভিটামিন ডি৩ অ্যাম্পুল ইনজেকশন, রেসোগাম পি, ক্লোপিকজল ডিপোর্ট, ফ্লুয়ানজল ডিপোর্ট, হেপাবিগ হেপাটাইটিস বিসহ বিভিন্ন দেশি-বিদেশি নকল এন্টিবায়োটিক ওষুধ। আর এসব ওষুধ ব্যবহারে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন উর রশিদ।

তিনি বলেন, সম্প্রতি ডিবি পুলিশের অভিযানে প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের নকল ওষুধসহ বড় একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের কাছে খবর আসে তাদেরই সহযোগী মিটফোর্ড থেকে ওষুধের কাঁচামাল সংগ্রহ করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ইনজেকশন তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিল।

তিনি বলেন, চক্রটি টিটেনাস দিয়ে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন বানাতো, ভিটামিন বি৩ বানাচ্ছিল এক্টুপিস সকেট দিয়ে এবং ক্লোপিকজল বানাচ্ছে ইন্ডিয়ান ড্রাইকিজাম এ্যাম্পুল দিয়ে। তার মানে এই ওষুধগুলো নকল বানিয়ে অধিক লাভে বিক্রি করছে। মানে টিটেনাস ১০ টাকা দিয়ে কিনে হেপাবিগ বানিয়ে ৪৬০০ চাকায়, ক্লোপিকজল ৫টাকা দিয়ে বানিয়ে ডেনমার্কের ওষুধ বলে বিক্রি করছে ৪৫০ টাকা। গর্ভবতী মহিলাদের প্রয়োগ করা হয় রোসোগাম পি। এটা যেসন গ্রুপের একট্রোপিন ১০ টাকা দিয়ে কিনে রোসোগাম বানিয়ে সাড়ে চার হাজার টাকা বিক্রি করতো। এভাবে বিভিন্ন ওষুধ নকল করে বাজারে ছড়িয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।

ডিবি প্রধান বলেন, এসব নকল ওষুধের কার্যকারিতা না থাকায় সাধারণ মানুষ কোনো সেবা পেত না, বরং নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতো। তারা এমনভাবে এসব ওষুধ হুবহু প্যাকেজ করতো যাতে করে সাধারণ মানুষ চেনার উপায় নেই।

এমএসি/পিএইচ