যানজট কমিয়ে আনতে নেওয়া প্রকল্প গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) সাতটি ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার (২৪ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ভিডিও কানফারেন্সের মাধ্যমে তিনি এই উদ্বোধন করেন।

মন্ত্রী বলেন, নতুন সাতটি ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। ঈদের ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এই সাত ফ্লাইওভার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার। এই প্রকল্প নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে। যথাসময়ে শেষ করা সম্ভব হয়নি। এটি বাস্তবায়নে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেছে। দেরিতে হলেও কাজটি শেষ হওয়ার পথে।

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আশা করছি— এই বছরেই এটি দিয়ে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারব। অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজগুলোও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। ডিসেম্বর নাগাদ বাকি কাজ শেষ হবে। এরপর বিআরটি করিডোর দিয়ে বাস চলাচল করতে পারবে।

এখন থেকে এই ফ্লাইওভারগুলো দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে। যার মধ্যে রয়েছে ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাম পার্শ্ব), ৩২৩ মিটার এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান পার্শ্ব), ১৮০ মিটার জসীমউদ্দিন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার ভোগড়া ফ্লাইওভার এবং গাজীপুরের চৌরাস্তায় ৫৬৮ মিটার ফ্লাইওভার।

এর আগে ১৬ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, এ বছরের জুনের মধ্যে বিআরটি প্রকল্প শেষ হবে। এখনই নিচের অংশের আর ভোগান্তি নেই। মাত্র ৪০ মিনিটে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে।

গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট— প্রকল্পের (বিআরটি, গাজীপুর-এয়ারপোর্ট) আওতায় উড়াল সড়ক তৈরি হচ্ছে গাজীপুর থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ উত্তরা হাউজ বিল্ডিং থেকে টঙ্গী চেরাগ আলী মার্কেট পর্যন্ত এলাকার সড়কের কাজ করছে। বাকিটা হচ্ছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অধীনে।

ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরের যোগাযোগে মানুষের ভোগান্তি দূর করতে শুরুতে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল চার বছরের মধ্যে, যদিও তা গড়িয়েছে ১২ বছরে। প্রকল্পের সময় আর অর্থ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে মানুষের ভোগান্তিও বেড়েছে অনেক।

২০১১ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রকল্পের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করে। ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেকে বিআরটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। এরপর কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। শুরুতে প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ছিল চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত। কিন্তু পরে সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হলেও পথ ছোট করে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে কেরানীগঞ্জের পরিবর্তে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত করা হয়।

বিআরটি প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিআরটি বাস্তবায়িত হলে ১০০টি আর্টিকুলেটেড বাসের মাধ্যমে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করবে। এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।

এমএম/এমজে