ভুয়া পিএইচডি দেখিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা, পরে দুদকের জালে ধরা
ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি দেখিয়ে এবং অভিজ্ঞতার ভুয়া সনদ ব্যবহার করে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) থেকে নিয়োগ পেয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে ধরা পড়তে হয়েছে।
জাল সনদ দেখিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে চাকরি গ্রহণের অভিযোগে সহযোগী অধ্যাপক এস এম আলমগীর কবীরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. সাঈদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
আলমগীর কবীর শিক্ষা ক্যাডারের ১০ শতাংশ সরাসরি কোটায় সহযোগী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পদে নিয়োগ পেতে অবৈধ পন্থা, জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার অনুসন্ধানে দেখা যায়, এস এম আলমগীর কবীর ২০০৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে শিক্ষা ক্যাডারের ১০% সরাসরি কোটায় সহযোগী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) পদে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নিয়োগ পান। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ওই পদে নিয়োগে চারটি শর্ত ছিল যার মধ্যে রয়েছে (১) প্রার্থীদের ডক্টরেট ডিগ্রিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা দ্বিতীয় শ্রেণির সম্মান ডিগ্রিসহ কলেজ যা বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যূনতম ৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, (২) প্রার্থী যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জন করেছেন সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক চরিত্রগত সনদ, (৩) প্রার্থী যেসব সরকারি/বেসরকারি কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন সে সব কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডিগ্রি কলেজ/অথবা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের হতে হবে এবং তার অর্জিত শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ডিগ্রি পর্যায়ের অভিজ্ঞতার সনদে তা অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে, (৪) অভিজ্ঞতার সনদে কলেজটি ডিগ্রি কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় এবং অর্জিত অভিজ্ঞতা ডিগ্রি পর্যায়ের না থাকলে এবং অভিজ্ঞতার সনদ জমা না দিয়ে যোগদানপত্র জমা দিলে প্রার্থিতা বাতিল হবে।
কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে আসামি এস এম আলগীর কবীরের আবেদনের সঙ্গে কামডেন ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের পিএইচডি ডিগ্রি সংযুক্ত থাকলেও ওই নামের কোনো রেজিস্ট্রার্ড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়ায় পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক পদে চাকরির আবেদনের জন্য ন্যূনতম ৮ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার মধ্যে ২ বছর ৩ মাস ১১ দিনের ঘাটতি ছিল। অর্থাৎ তিনি চাকরির আবেদনে ডক্টরেট ডিগ্রি ও অভিজ্ঞতায় প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।
আসামি এস এম আলমগীর কবীর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের প্রভাষক রাষ্ট্রবিজ্ঞান পদ থেকে প্রেষণে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এপিএস এবং তৎপরবর্তীতে তৃতীয় সচিব হিসেবে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনে কর্মকালীন সরকারি কর্মচারী হয়ে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।
আরএম/এমএ