আগামী ২৮ এপ্রিলের পর গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে সরকারি আদেশ জারি হলে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এই লক্ষ্য সামনে রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে ৩৫৬টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পণ্যবাহী ট্রেন চলছে। এগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। তবে পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অঞ্চলেই রেলপথ সংস্কারের কাজ চলছে পুরোদমে।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের যাত্রীবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচগুলো বসিয়ে রাখা হয়েছে। ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য আমরা তৎপর আছি। কারণ সরকার নির্দেশ দিলে ২৮ এপ্রিলের পর যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালনা করতে হবে।

  • পণ্য পরিবহনে লোকসান পৌনে ২০০ কোটি টাকা
  • ১৬৩টি ইঞ্জিন বসিয়ে রাখা হয়েছে
  • চলছে রেলপথ সংস্কার কাজ

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে ১৪০টি ইঞ্জিন রয়েছে। তার মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্য রয়েছে ৯৯টি। এগুলো বসিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে আছে ৯৬টি ইঞ্জিন। তার মধ্যে ৬৪টি ব্যবহার হচ্ছে না। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এই দুই রেল অঞ্চলে সবমিলিয়ে ১৬৪টি ইঞ্জিন ব্যবহৃত হচ্ছে না। তবে এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলছে বলে জানা গেছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন রেলপথে এখন সংস্কার চলছে। পরীক্ষামূলক ট্রেনও চালানো হচ্ছে।

চলমান সর্বাত্মক বিধিনিষেধের পর জনস্বার্থ বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা করছে বলে শনিবার (২৪ এপ্রিল) জানিয়েছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বরিশাল সড়ক জোন, বিআরটিসি ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান ওবায়দুল কাদের।

এদিকে, রোববার (২৫ এপ্রিল) থেকে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে বলেছেন, চলমান ‘লকডাউন’ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। জীবন ও জীবিকার কথা বিবেচনায় রেখে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেওয়া হচ্ছে। কেউ যেন মাস্ক ছাড়া কেনাকাটা না করে সে বিষয়টি অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে।

একাধিক মন্ত্রীর বক্তব্যের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেছেন, ২৮ এপ্রিলের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে, তাই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

গত বছর করোনার কারণে ২৫ মার্চ থেকে ৩৮৬টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে মালবাহী ট্রেন চালু ছিল। তাতে পৌনে ২০০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের। ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন, পশু পরিবহনের ট্রেন, পার্সেল ও মালবাহী ট্রেনে পণ্য পরিবহণে ২৫ শতাংশ ছাড়সহ সব চার্জ মওকুফ করা হয়। প্রায় ৪৬ শতাংশ ছাড়ে পণ্য পরিবহন করা হয় বিশেষ ট্রেনগুলোতে।

পিএসডি/ওএফ