বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড
মর্গে অভিশ্রুতির মরদেহ, পরিচয় নিয়ে ধূম্রজাল
রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে অভিশ্রুতির মরদেহ গ্রহণ করতে এসেছেন শাবলুল আলম সবুজ নামের একজন। তিনি নিজেকে অভিশ্রুতির বাবা বলে দাবি করছেন। এদিকে শাবলুল আলম ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং তার স্ত্রী বিউটি বেগমও ইসলাম ধর্মের অনুসারী। তবে অভিশ্রুতির বায়োডাটায় দেখা গেছে তিনি একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। বায়োডাটায় পিতা এবং মাতার নামেও নেই মিল। এতেই অভিশ্রুতির মরদেহ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিন দেখা গেছে, বার্ন ইন্সটিটিউটের অভ্যর্থনা কক্ষের সামনে অভিশ্রুতিকে নিজের মেয়ে বলে দাবি করছেন সবুজ। তবে নিজের মেয়ের পেশা এবং ধর্মচর্চা নিয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি। মেয়ের সাথে কোনো ছবিও নেই তার কাছে। দুইদিন আগে অভিশ্রুতির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে দাবি করলেও তার কল লিস্ট চেক করেও মেলেনি সে প্রমাণ।
অন্যদিকে শাস্ত্রীর সিভিতে দেখা গেছে, সেখানে তিনি বাবার নাম লিখেছেন অভিরূপ শাস্ত্রী এবং মায়ের নাম লিখেছেন অপর্ণা শাস্ত্রী। সিভিতে তিনি নিজের বর্তমান ঠিকানা লিখেছেন সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, মৌচাক।
সবুজ বলেন, অভিশ্রুতি আমার মেয়ে। অভিশ্রুতি আমার তিন মেয়ের মধ্যে বড়। আমার আরও দুটি মেয়ে রয়েছে। নিজের মেয়েকে নিয়ে কেন মিথ্যা বলবো?
এদিকে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বলেন, গত আট মাস ধরে তার সঙ্গে আমাদের পরিচয়। এই আট মাসে সে আমাদের মন্দিরের সঙ্গে অনেকটাই কানেক্টেড। যে ভদ্রলোক (সবুজ) শাস্ত্রীকে নিজের মেয়ে বলে দাবি করছেন তিনি মিথ্যা কথা বলছেন। তার পরিবারের সবাই ভারতের বানারসে থাকেন।
এদিকে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দ্য রিপোর্টের প্রতিবেদক গোলাম রব্বানী বলেছেন, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিশ্রুতির সহকর্মী ও বন্ধুরা তার মরদেহ শনাক্ত করেন। আমরা জানতে পেরেছি ওই ভবনের একটি রেস্টুরেন্টে তিনি তার এক বন্ধুর সঙ্গে এসেছিলেন। গতকাল রাত থেকে তার ফোন বন্ধ ছিল এবং আমরা তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না।
বার্ন ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের মর্গে এক হিন্দু নারীর মরদেহ আছে।
রব্বানী বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের হাতে থাকা লাল সুতো (মৌলি সুতো) দেখে অভিশ্রুতিকে শনাক্ত করি। অভিশ্রুতির পরিবারের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করা যায়নি। কারণ আমাদের কাছে থাকা তার পরিবারের একমাত্র নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।
গোলাম রব্বানী আরও বলেন, ইডেন মহিলা কলেজের রাজিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন অভিশ্রুতি। আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। অভিশ্রুতি বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায়। তিনি ইডেন মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এমএম/পিএইচ