মার্চের শুরু থেকেই সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১০ টাকা কমানোর কথা থাকলেও এখনো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। লিটারপ্রতি ১০ টাকা কমে ১৬৩ টাকায় বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হওয়ার কথার থাকলেও সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। এমনকি খোলা তেলেরও দাম কমেনি। খোলা তেল ১৪৯ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও সেখানেও নেই দাম কমার প্রভাব।

শুক্রবার (১ মার্চ)  রাজধানীর বাসাবো মাদারটেক বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে সব ব্যবসায়ীই আগের দামেই তেল বিক্রি করছেন। মার্চের শুরুতে লিটারে তেলের দাম কমার নির্দেশনা যেন সরকারি দপ্তরের কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। আগের দামেই বাজারে তেল বিক্রি হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন ভোক্তা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে সরকারি নির্দেশনাকেও।

তেল বিক্রেতা রাসেল বলেন, আমাদের এখানে ১৭০-৭৫ টাকা দামেই বোতলের তেল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখনো নতুন তেল আসেনি। নতুন তেল এলেই দাম কমবে। যে তেল আছে, সেগুলো তো বাড়তি দামে কেনা। বাড়তি দামে তেল কিনে লসে তো বিক্রি করা যায় না।

বাজারে তেলের দাম বাড়লে পুরোনো তেলের দাম কীভাবে বৃদ্ধি পায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অনেকেই করে। দাম বাড়লে তো সবাই বাড়াবেই। অনেকে আবার আগের রেটেই তেল বিক্রি করে।

আবু হানিফ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, নতুন তেল পাইনি। তবে আমি লিটারে ৫ টাকা দাম কমিয়ে বিক্রি করছি। আশপাশের অনেক দোকানেই ১৭০-৭৫ দামে বিক্রি করছে। এই পাঁচ-দশ টাকা কমানোতে বাজারে আহামরি পরিবর্তন হয় না।

তেল কিনতে আসা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা ইয়াসিন পাভেল বলেন, আগের দামেই তেল বিক্রি হচ্ছে। আমি ১৭০ টাকা করেই তেল কিনলাম। নিউজে তো দেখেছিলাম ১ মার্চ থেকে লিটারে ১০ টাকা কমবে। সেই চিত্র তো বাজারে দেখতে পাচ্ছি না।

পাভেল বলেন, বাজারে কিছুর দাম বৃদ্ধির আগেই সব ব্যবসায়ী খবর পায়। তখন তাদের বলা লাগে না দাম বৃদ্ধি করে বিক্রি করুন। কিন্তু দাম কমলে তারা মনে খবর রাখে না। ভোক্তাদের কেন এসব হিসাব প্রতিদিন করতে হবে?

বেসরকারি এই ব্যাংকার বলেন, ১০ টাকা কিন্তু কম টাকা না। একজন রিক্সা চালক হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে একজন প্যাসেঞ্জার থেকে ১০ টাকা পায়। কিন্তু বিক্রেতাদের কাছে এগুলো বিষয়ই না। কেউ দাম কমায়নি।

বাজার করতে আসা আমেনা বেগম বলেন, সবকিছুই দাম বাড়ছে। দাম কবে কমলো বুঝলাম না তো। আমি তো বাসার বাজার রেগুলারই করি, কিন্তু দাম কমেছে এমন কিছুই দেখিনি। সবকিছুরই না-কি দাম বাড়ে। পেঁয়াজ, রসুন ও আদা থেকে শুরু করে সব কিছুতেই দাম বেড়েই চলছে।

এর আগে, শুল্ক ছাড় দেওয়ার পর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেন মিল মালিকরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে টাস্কফোর্স ও জাতীয় কমিটির সভা শেষে এ তথ্য জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। 

প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এনবিআর ভোজ্যতেলের শুল্ক বাবদ ৫ টাকা কমালেও রোজা সামনে রেখে মিল মালিক বা পরিশোধনকারীরা লিটারে ১০ টাকা করে কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১ মার্চ থেকে নতুন দর কার্যকর হবে। 

তাতে সয়াবিন তেল এক লিটারের বোতলে ১০ টাকা কমে ১৬৩ টাকায় বিক্রি হবে। আর খোলা সয়াবিন তেল দাম কমার পর বিক্রি হবে ১৪৯ টাকায়। 

এমএম/কেএ