রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে। সেখানেই সকাল থেকে প্রিয়জনের মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ মানুষজনের আত্মীয়-স্বজন। আবার পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর সকাল থেকে মরদেহ নিয়েও যাচ্ছেন অনেকে। মরদেহের অপেক্ষায় থাকা এসব স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনের চত্বর। 

শুক্রবার (১ মার্চ) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে জরুরি বিভাগ এবং বার্ন ইউনিটের সামনে স্বজনরা অপেক্ষা করছেন। অনেকেই প্রিয়জনের স্মৃতি স্মরণ করে করছেন বিলাপ। 

আগুনে নিহত কাচ্চি ভাইয়ের কর্মচারী পটুয়াখালীর জুয়েলের স্ত্রী রেবা আক্তার বলেন, রাত দশটা পাঁচ মিনিটে সব শেষ কথা হয়েছিল। এরপর অনেক ফোন করেছি, কিন্তু ফোন রিসিভ করেননি। এখন স্বামীর মরদেহ পেলাম। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল। 

শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল ৯টায় ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ.কে.এম. হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ২৫ জনের মরদেহ স্বজনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনাক্ত হওয়া বেশ কয়েকটি মরদেহ হস্তান্তরের অপেক্ষায় রয়েছে। মরদেহ হস্তান্তর কার্যক্রম সহজ করতে জরুরি বিভাগের সামনে ঢাকা জেলা প্রশাসনের তথ্য ও সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত বহুতল ভবনে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। এতে অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গতকাল রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।

তিনতলায় ছিল কাপড়ের দোকান। বাকি সব ছিল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা ছড়িয়েছে ভয়াবহভাবে।

আরএইচটি/কেএ