ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক
ভবনে ছিল একটি সিঁড়ি, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যু
কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাপড়ের দোকান ছিল। আমাদের দেখা মতে ভবনের অন্যান্য ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট ছিল। যেগুলোতে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার দেখেছি। যে কারণে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়েছে এবং দাউদাউ করে জ্বলেছে।
রাজধানীর বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট’ ভবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর রাত দেড়টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
আগুনে দগ্ধ হওয়ার চেয়ে বেশিরভাগ মানুষ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানান তিনি।
ভবনে কোনো অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না— এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘দ্বিতীয় তলা ছাড়া ভবনটার প্রতিটি ফ্লোরের সিঁড়িতে ছিল সিলিন্ডার। যেটা খুবই বিপজ্জনক ব্যাপার। কারণ, আগুন লাগলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়, যা ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। ভবনটা মনে হয়েছে অনেকটা আগুনের চুল্লির মতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি ভবনটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ ভবনে মাত্র একটি সিঁড়ি। আমরা এখনও উদ্ধার অভিযান ও তল্লাশি চালাচ্ছি ।’
‘আগুনে দগ্ধ না হয়ে মানুষ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে অর্থাৎ অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বা অবচেতন হয়েছেন। প্রত্যেকটি অগ্নিদুর্ঘটনার পর তদন্ত হয়। এক্ষেত্রেও তদন্ত হবে। চুলা থেকে অথবা গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’
ঘটনাস্থল থেকে কতজনকে জীবিত ও মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে— এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ এবং অবচেতন অবস্থায় ৪২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। অবচেতন অবস্থায় উদ্ধার ৪২ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি চিকিৎসক নিশ্চিত করবেন।
পরবর্তীতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
‘অবচেতন অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো ৪২ জনের মধ্যে চার শিশু ও ২১ নারী ছিলেন। বাকিরা পুরুষ। পাশাপাশি জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ জনকে। আমরা আবারও ভবনটির ওপর থেকে নিচ এবং নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত তল্লাশি করছি। ভবনের কোনায় বা সিঁড়িতে কেউ পড়ে থাকতে পারেন’— বলেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক।
তিনি আরও বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করেছে র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।
জেইউ/এমটিআই