ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর একটি মাইলফলক হবে : রাষ্ট্রদূত
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা আগামী এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস। ভিয়েরার ওই সফর দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হবে বলে মত ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূতের।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ব্রাজিলের তুলা উৎপাদকদের সংগঠন এবিআরএপিএ এবং জাতীয় তুলা রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (এএনইএ) আয়োজিত ‘কটন ব্রাজিল আউটলুক ২০২৪ বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান তিনি।
বিজ্ঞাপন
ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত জানান, আগামী ৮ এপ্রিল আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন। প্রথমবারের মতো ব্রাজিল থেকে কোনো উচ্চ পর্যায়ের সফর হবে এটি। এই সফর হবে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাইলফলক। এর মাধ্যমে সম্পর্ককে আমরা মজবুত করতে পারব।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মাউরো ভিয়েরার এ সফরে সার্বিক সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। পাশাপাশি ব্রাজিলের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও কৃষি খাতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা।
জানা গেছে, ৮ এপ্রিল ব্রাজিলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের প্রথম কর্মসূচি শুরু হবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে। পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জি-২০ চেয়ার হিসেবে ব্রাজিলের অগ্রাধিকার নিয়ে বক্তব্য দেবেন ভিয়েরা।
এছাড়া হাছান মাহমুদের আমন্ত্রণে ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে ব্রাজিলিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। সময় সাপেক্ষে বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন তিনি।
কটন ব্রাজিল আউটলুক ২০২৪ বাংলাদেশ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানির গার্মেন্টস খাতে ব্রাজিলের তুলা ব্যবহারের বিভিন্ন দিক এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ব্রাজিলের তুলা রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ২০২২-২৩ সালে ব্রাজিল থেকে ২৩৩ টন তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ, ২০২৩-২৪ সালে তা এখন পর্যন্ত ১৩২ টন।
ব্রাজিলের তুলা রপ্তানিকারকরা তাদের পণ্যের বিভিন্ন ইতিবাচক দিক এবং বৈশ্বিক তুলা বাজারের পরিস্থিতি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা স্বত্বেও বাংলাদেশের এগিয়ে যাচ্ছে। নানা ঝামেলা থাকার পরও বাংলাদেশ সংগ্রাম করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করছে এবং সামনের দিনগুলোর কথা মাথায় রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভৌগোলিকভাবে অনেক দূরে দেশ হলেও কৃষি উৎপাদন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলার মতো প্রধান প্রধান ইস্যুগুলোতে উভয় দেশ একই রকম।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ উদাহরণ। তুলা উৎপাদনে ব্রাজিলের যে সক্ষমতা সেটার সঙ্গে বাংলাদেশের পোশাক খাত সম্পৃক্ত হলে উভয়পক্ষ উপকৃত হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এবিআরএপিএ প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দ্রে পেদ্রো শেনকেল ও ভাইস প্রেসিডেন্ট গুস্তাবো ভিগানো পিকোলি, এএনইএ প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ফাউস প্রমুখ।
এনআই/এসকেডি