রাজধানীর বাড্ডা থানার সাঁতারকুল এলাকায় ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত চিকিৎসকদের বিচার ও হাসপাতাল বন্ধের দাবি জানিয়েছেন শিশু আয়ানের বাবা মো. শামীম আহমেদ।

তিনি বলেন, খতনার নামে আমার আয়ানকে হত্যা করা হয়েছে। ওই ঘটনায় যদি ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতো, কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিচার হতো তাহলে নতুন করে রামপুরার জে এস হাসপাতালে শিশু আহনাফের মৃত্যু হতো না।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।

ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালের বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আমি শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। অন্যদিকে বাড্ডা থানায় করা মামলায় জড়িতদের এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি থানা পুলিশ। অথচ রামপুরার জে এস হাসপাতালে যে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো সঙ্গে সঙ্গে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অথচ আমার সন্তান আয়ানের ঘটনার দুই মাস হলেও কেউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমি ঢালাওভাবে সব ডাক্তারকে দোষারোপ করছি না, যারা ডাক্তার নামের কসাই, যারা অর্থ ও অবহেলার জন্য এমন ফুটফুটে শিশুদের হত্যা করছে তাদের শাস্তি চাই। যদি আমার সন্তান আয়ান হত্যার সঠিক বিচার হতো তাহলে হয়ত রামপুরায় আবার খতনা করাতে গিয়ে শিশু আহনাফের মৃত্যুর ঘটনা ঘটত না। চিকিৎসকরা চাপে থাকতেন।

আক্ষেপ করে এ অভিভাবক বলেন, আমার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবে না। কিন্তু আমি চাই দেশের মানুষ সচেতন হোক, পাশাপাশি অভিভাবকরাও সচেতন হোক।

মামলার বিষয়ে শামীম আহমেদ বলেন, আমি মামলা করলেও কোনো অগ্রগতি নেই। জড়িতদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ফলে আমি ডিবির শরণাপন্ন হয়েছি। আমি মনে করি, ডিবি আমাদের শেষ ভরসাস্থল। ডিবি যদি একটি গরিব পিতা হিসেবে আমার প্রতি সহানুভূতি দেখায় তাহলে আমরা সুষ্ঠু বিচার পাব। ডিবির হারুন সাহেব বলেছেন, তারা আমাদের অভিযোগ আমলে নেবেন।

ইউনাইটেড হাসপাতালের বিষয়ে তিনি বলেন, ইউনাইটেড গ্রুপ সবকিছু থেকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। তারা মিডিয়ার ওপরেও হামলা চালিয়েছে, ক্যামেরা ভাঙচুর করেছে। এরপরেও যারা জীবনের মায়া ত্যাগ করে সংবাদ প্রকাশ করছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।

উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি রাজধানীর সাঁতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে টানা ৭ দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে শিশু আয়ান মারা যায়।

পরদিন ৯ জানুয়ারি ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ও পরিচালককে আসামি করে বাড্ডা থানায় মামলা করেন শিশুর বাবা শামীম আহমেদ। 

জেইউ/এসকেডি