রাজধানীর গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স ভবনের ১৫৮টি দোকান বা স্পেস বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে গুলিস্তান কমপ্লেক্স ভবনের প্রতিষ্ঠান প্রধান ও মেসার্স ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের দুই পরিচালকের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আদালতে দুদকের উপপরিচালক অজয় কুমার সাহা চার্জশিট দাখিল করেছেন। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানাধীন গুলিস্তান কমপ্লেক্স ভবনের ১৫৮টি দোকান বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে পাশ কাটিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিক্রি ও ভাড়াচুক্তি করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধি ১০৯ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। 

আসামিরা হলেন, গুলিস্তান কমপ্লেক্স ভবনের প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রশাসক মাহমুদ পারেভেজ জুয়েল এবং মেসার্স ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের দুই পরিচালক মো. জিয়াউল আহসান ও গোলাম মোস্তফা কামাল।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে ১৫৮টি দোকান/স্পেসের বরাদ্দ ও সালামি চুক্তি ছাড়াই বরাদ্দ দিয়েছেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আওতাধীন গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের ১৫৮টি দোকানের মধ্যে মো. জিয়াউল আহসান ১০১টি, গোলাম মোস্তফা কামাল ৪৯টি ও মাহমুদ পারভেজ জুয়েল আটটি দোকানের সালামি চুক্তি ছাড়াই দোকান বা স্পেস ভাড়া চুক্তির মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ২০০১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মেসার্স দি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ার্সকর আল-হোসাইন ম্যানশনকে গুলিস্তান কমপ্লেক্সের ০.৬১৪ একর জমির ওপর ‘নির্মাণ ও হস্তান্তর’ পদ্ধতিতে ২০ তলা ভবন নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম আলাউদ্দিনের সঙ্গে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষে মহাব্যবস্থাপক খন্দকার ফজলুল হক ২০০১ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি মূল চুক্তিপত্র ও ২০০৬ সালের ২৬ জুলাই সম্পূরক চুক্তি সম্পাদন করেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলে। দুটি বেইজমেন্টসহ ১১ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়। তারপর ডেভেলপার কোম্পানি নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয়।

২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি নির্বাহী কমিটির ২১তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডেভেলপার কোম্পানিকে সাত দিনের মধ্যে নির্মাণকাজের বিষয়ে জানাতে নোটিশ দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১০ জুলাই মেসার্স দি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের সঙ্গে সম্পাদিত মূল ও সম্পূরক চুক্তিপত্র বাতিল করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট। গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের স্পেস বরাদ্দ ও সালামি চুক্তি সম্পাদনে একমাত্র বৈধ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি এএসএম আলাউদ্দিন। কিন্তু ১৫৮টি দোকান কোনো বরাদ্দপত্র বা সালামি চুক্তি ছাড়াই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

আরএম/এসএম