১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লালমনিরহাট সেকশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হতে পারে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের বেতন না পাওয়ায় লালমনিরহাট লোকো সেডের সকল লোকো রানিং কর্মচারীরা এই কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) লোকো রানিং কর্মচারীদের বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলীকে (ইনচার্জ-লোকো) দেওয়া এক চিঠিতে বিষয়টি জানা গেছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়, সকল রানিং কর্মচারীরা আপনার (ইনচার্জ-লোকো) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করছি যে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের নিয়মিত বেতন এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। নির্ধারিত সময়ে বেতন না হলে দ্রব্যমূল্যের এ বাজারে পরিবারের ব্যয় ও ট্রেনে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। যার ফলে রানিং কর্মচারীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, আতঙ্কিত ও হতাশাগ্রস্ত। এই অবস্থায় ট্রেনে কাজ করতে গেলে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় অর্জিত মাইলেজসহ রানিং সেড ম্যানুয়াল ও সংস্থাপনিক কোডের বিধি মোতাবেক যথা নিয়মে লোকে রানিং স্টাফদের জানুয়ারি মাসের নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ বেতন ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইবাস++ এর মাধ্যমে পরিশোধ করা না হলে প্রত্যেক রানিং কর্মচারী নিজ নিজ কর্তব্য পালন থেকে বিরত থাকবে। যা গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এক্সএক্সআর মেসেজের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনো আমরা লোকো রানিং কর্মচারীরা বেতন পায়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। তাই পূর্ব  ঘোষণা অনুযায়ী প্রত্যেক লোকো রানিং কর্মচারীগণ ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ০০.০১টা থেকে নিজ নিজ কর্ম থেকে বিরত থাকবে মর্মে আপনার মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অবগত করছি।

এই চিঠিতে লালমনিরহাট লোকোসেডের সকল লোক রানিং কর্মচারীর পক্ষে ১৩ জন কর্মীর স্বাক্ষর আছে।

চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (লালমনিরহাট) সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এখন আবারও আলোচনায় বসছি। বিস্তারিত পরে জানাব।

এ প্রসঙ্গে জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালামকে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।

পরে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই সমস্যা সকালের দিকে কেটে গেছে। লালমনিরহাটের কয়েকজনের বেতন হয়েছে। বেতন যখন আসে, তখন সেটা চেক করতে হয়। ২৫০ বেতন চেক করে সেটি লোড দিতে হয়। আমাদের আইবাস সন্ধ্যা ৬টার সময় বন্ধ হয়ে যায়। খোলা থাকলে লোড দিতে পারতাম।

তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে তারা কোনো কথা বলেনি। আমি কন্ট্রোলের মাধ্যমে সব জায়গায় জানিয়ে দিয়েছি লালমনিরহাটে ফুল বেতন হবে। আর পাকশীতে ২৫০ লোড হবে। প্রতিটি লোডে অন্তত ৫ মিনিট সময় লাগে। এরপরও যদি (ট্রেন চালানো) বন্ধ করে, তবে তাদের জন্য সমস্যা হবে। বিষয়টি রাষ্ট্র ভালোভাবে দেখবে না। আজ না হলে কাল সবাই বেতন পাবে। কিন্তু এটার জন্য ট্রেন বন্ধ করা যাবে না।

এমএইচএন/এএএ