শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে বর্তমান অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার। 

তিনি বলেন, শিক্ষিত মূর্খ তৈরি করা হচ্ছে যাতে এখানকার মানুষকে শোষণ করা যায়। তাদের উপর স্বৈরাচারী শাসন জারি রাখা যায়।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভয়েস অব লইয়ার্স বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শিক্ষা, সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ট্রান্সজেন্ডার বিতর্ক : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার বলেন, যারা পলিসি মেকার, তারা চায় না এখানকার মানুষ শিক্ষিত হোক। তাদের ছেলে মেয়েদের বিদেশে পড়াচ্ছে। আর আমার ছেলে মেয়েকে এখানেই পড়াতে হবে। তাই পলিসি মেকারদেরই (সরকার) পরিবর্তন করতে হবে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, এই সরকার যেমন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত নয়, তেমনি তারা একটি আরোপিত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এ জাতিকে শাসন করতে চায়। আজকে যে ট্রান্সজেন্ডারের কথা আসছে তা পাশ্চাত্যের ক্ল্যাস অব সিভিলাইজেশ্যন এর আলোকে আসছে।

তিনি বলেন, পাশ্চাত্য যেমন তাদের সংস্কৃতি আমাদের উপর চাপাতে চাইছে তেমনি সরকারও আমাদের ইসলামের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা করছে। এখন বলা হচ্ছে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও ভালো করতে হবে। এই সরকার যদি থাকে তাহলে দেশের স্বাধীনতা আর থাকবে না।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের ফলে লিঙ্গ পরিচয় সংকট তৈরি করবে যা সামাজিক বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাবে। এছাড়া পরিবার ব্যবস্থার ভাঙন, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি এবং মানসিক রোগ বৃদ্ধি, অপরাধ ও আত্মহত্যা বৃদ্ধির মতো ঘটনা বৃদ্ধি পাবে। 

এ ছাড়াও সমগ্র কারিকুলাম সংশোধন, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু পুনরায় লিখা, শরীফার গল্প বাদ দেওয়া, দেশে এলজিবিটিকিউ কার্যক্রম বন্ধ করা, 'তৃতীয় লিঙ্গ' অর্থে 'ট্রান্সজেন্ডার' শব্দ ব্যবহার না করা, ট্রান্সজেন্ডারদের ধূর্ততা থেকে হিজড়াদের রক্ষা করা, হিজড়াদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করাসহ ট্রান্সজেন্ডারদের কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি। 

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশের প্রধান ব্যক্তিদের কেউ এই দেশে পড়াশোনা করেন না। তাই তারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভাববে না। রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া এই অবস্থা পরিবর্তন সম্ভব না। আমরা একটা কমিশন করে নতুন শিক্ষানীতি তৈরি করবো। 

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি আব্দুস সালাম মামুন, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার ইকতেদার আহমেদ, ঢাকা ট্যাক্সেস বারের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন প্রমুখ।

এমএইচএন/এমএসএ