জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মহিলা পরিষদ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে সংগঠনটি।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, গত শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানসহ বহিরাগত যুবক মামুন এক দম্পতিকে ডেকে নিয়ে স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে। 

ওই দিন সন্ধ্যায় নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে নিয়ে আসেন তাদের পূর্ব পরিচিত বহিরাগত মামুন। ভুক্তভোগীর স্বামী তার স্ত্রীকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার সময় বাসা থেকে মামুনের জন্য কিছু জামা-কাপড় নিয়ে আসতে বলেন এবং মামুন ক্যাম্পাসে মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে থাকবেন।

এরপর মোস্তাফিজ ও মামুন মিলে ভুক্তভোগীর স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখেন। পরে মামুনের জামা-কাপড় নিয়ে ওই নারী ক্যাম্পাসে এলে তার কাছ থেকে মামুন সেগুলো নিয়ে কক্ষে রেখে ফিরে এসে ওই নারীকে বলেন, তার স্বামী হলের অন্য ফটক (জঙ্গলের দিক) দিয়ে আসবেন, সেদিকে যেতে হবে। পরে তাকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ বহিরাগত যুবক মামুন তাকে ধর্ষণ করে। 

মহিলা পরিষদের এ নেতারা বলেন, দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও ক্ষুদ্ধ। এ ধরণের ঘটনা নারী ও কন্যার নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। নারী ও কন্যার মর্যাদা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

মহিলা পরিষদ নারী ও শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতামুক্ত স্বাধীন ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতকরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।

মহিলা পরিষদ দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ নির্যাতনের শিকার নারী ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।

এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা এবং সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে সারাদেশে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।

জেইউ/এসকেডি