অনলাইনে সরবরাহকৃত পণ্য ও খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি সার্ভিস চার্জ কমিয়ে কোনোরকম প্ল্যাটফর্ম ফি আদায় না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত ‘অনলাইনে সরবরাহকৃত খাদ্যের নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার চাই’ শীর্ষক এক নাগরিক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে দেশে উচ্চ মূল্যের খাদ্যসামগ্রী কিনতে নাগরিকদের নাভিশ্বাস। এর মধ্যে এই খাবারে ভেজাল মিশ্রণ, ফরমালিন এবং কেমিকেল মিশ্রণের ফলে খাদ্য বিষক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে। যে টাকার খাবার কিনতে হয় তার সমপরিমাণ টাকার ঔষধ কিনতে হচ্ছে। ঘরে ঘরে আজ অসুস্থ মানুষ। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য খাদ্যের নিরাপত্তা অপরিহার্য। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং নিরাপদ খাদ্য আইন কার্যকর করতে হবে। দায়ীদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এর মধ্যে অনলাইনে খাদ্যদ্রব্যে কি ধরনের খাবার সরবরাহ করছে তার কোন নজরদারিও নেই, নীতিমালাও নেই। ডিজিটাল যুগে ঘরে বসে খাদ্যের সাথে মানুষ বিষ খাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অনলাইনে খাদ্যের নিরাপত্তা নিয়ে এবং সার্ভিস চার্জ, ওজনে কম দেওয়া, সময় মতো খাবার সরবরাহ না করা, অফারের দেখানো দামের চাইতে অতিরিক্ত দাম নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া নষ্ট খাবার ফেরত না নেওয়া। অ্যাপে অর্ডার নেওয়ার সময় খাবারের দাম ও ডেলিভারি ফির সাথে অতিরিক্ত প্ল্যাটফর্ম ফি হিসেবে তিন টাকা আদায় সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। গ্রাহকদের কাছে কৌশলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে অনলাইনে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।

অনুষ্ঠানে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মোস্তাক হাসান মো. ইফতেখার বলেন, অনলাইনে খাদ্যের সরবরাহের নীতিমালা বিভিন্ন দেশে থাকলেও বাংলাদেশে ছিল না। ইতোমধ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ একটি বিধিমালা ও খসড়া প্রণয়ন করেছে। যা নিয়ে পক্ষগণের সাথে মতামতের ভিত্তিতে এটি আইন আকারে প্রকাশ করা হবে। দেশের জনগণের ৯৯ শতাংশই জানে না তার খাদ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে। সরকার ও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে তার খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, একদিকে খাবার সংকট অন্যদিকে খাদ্যের উচ্চমূল্য আর সেই খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আমরা জর্জরিত। হাসপাতালগুলোতে গেলে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে কি পরিমাণ কষ্টে আছে। খাদ্যের বিষের সাথে সাথে অনলাইনে বিলাসী খাবারের নামে আমরা যে খাবার খাচ্ছি সেই খাবার যে বিষমুক্ত নয় তার নিশ্চয়তা কি।

এসময় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— অনলাইনে সরবরাহকৃত খাবার নীতিমালা তৈরি করা, খাদ্য উৎপাদনে ও খাদ্যের গুণগত মানের নিশ্চয়তায় প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ভোক্তার খাবার টেবিল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন অনলাইন সেবা প্রদানের সব কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ফেলো অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, গর্জো সভাপতি লিটু, মানবাধিকার কর্মী মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, স্বপন হাওলাদার, সংগঠনের প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ প্রমুখ।

এএসএস/এমএ