ফুটপাত থেকে পাঁচ তারকা হোটেল মোটেল, রান্নাঘর থেকে শুরু করে ভোক্তার খাবার প্লেট পর্যন্ত খাদ্যের নিরাপত্তা ও গুণগত মান নিশ্চিত করাসহ ৮টি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। 

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‌‘অনলাইনে সরবরাহকৃত খাদ্যের নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার চাই’ শীর্ষক একটি নাগরিক সমাবেশ, র‌্যালি ও লিফলেট বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব দাবি জানানো হয়। 

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো ৮টি দাবি হচ্ছে 

অনলাইনে সরবরাহকৃত পণ্যের মান ও খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে;  সার্ভিস চার্জ কমিয়ে কোনোরকম প্ল্যাটফর্ম ফি আদায় করা যাবে না; অনলাইনে সরবরাহকৃত খাবার নীতিমালা তৈরি করতে হবে;  খাদ্য উৎপাদনে ও খাদ্যের গুণগত মানের নিশ্চয়তায় প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ভোক্তার খাবার টেবিল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন অনলাইন সেবা প্রদানের সকল কৌশল অবলম্বন করতে হবে ; ভেজাল এবং ফরমালিনযুক্ত খাবার সরবরাহকারীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে;  স্ট্রিট ফুডের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে এবং ফুটপাত থেকে শুরু করে পাঁচ তারকা হোটেল মোটেল পর্যন্ত রান্নাঘর থেকে শুরু করে ভোক্তার খাবার প্লেট পর্যন্ত খাদ্যের নিরাপত্তা ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মোস্তাক হাসান মো. ইফতেখার বলেন, অনলাইনে খাদ্যের সরবরাহের নীতিমালা বিভিন্ন দেশে থাকলেও বাংলাদেশে ছিল না। ইতোমধ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ একটি বিধিমালা ও খসড়া প্রণয়ন করেছে। যা নিয়ে পক্ষগণের সঙ্গে মতামতের ভিত্তিতে এটি আইন আকারে প্রকাশ করা হবে। দেশের জনগণের ৯৯ শতাংশই জানে না তার খাদ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করা যাবে। সরকার ও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে তার খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। 

তিনি বলেন, প্রান্তিক চাষি থেকে শুরু করে ভোক্তার খাবার টেবিল পর্যন্ত খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি অনলাইনে যারা ব্যবসা করছেন তাদের মানসম্পন্ন খাদ্য সরবরাহের নিশ্চয়তা দিতে হবে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, একদিকে খাবার সংকট অন্যদিকে খাদ্যের উচ্চমূল্য আর সেই খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আমরা জর্জরিত। হাসপাতালগুলোতে গেলে দেখা যায় হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে কী কষ্টে আছে! খাদ্যের বিষের সাথে সাথে অনলাইনে বিলাসী খাবারের নামে আমরা যে খাবার খাচ্ছি সেই খাবার যে বিষযুক্ত নয় তার নিশ্চয়তা কী?  

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহি-উদ্দিন আহমেদ বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের খাদ্যে ভেজাল ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মিশ্রণের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত বিধান থাকলেও অনলাইনে খাবার সরবরাহ কীভাবে ও কী প্রক্রিয়ায় হচ্ছে তা দেখভাল করার জন্য কোন নিয়ম নীতি বা কর্তৃপক্ষের নজরদারই নেই। আর এই সুযোগে অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম, অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ, ওজনে কম দেওয়া এবং মানহীন খাবার সরবরাহ করে আসছে। এতে অনলাইনে গ্রাহকদের অতিরিক্ত অর্থের সাথে সাথে স্বাস্থ্যহানি এবং জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের ফেলো অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান, পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার, গজে সভাপতি লিটল, মানবাধিকার কর্মী মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, স্বপন হাওলাদার, সংগঠনের প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ প্রমুখ।

ওএফএ/এসকেডি