তদারকিতে এসে চালের অতিরিক্ত দাম কমালেন উপসচিব
বাজার তদারকির অংশ হিসেবে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় চালের বাজারে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এসময় কর্মকর্তারা বিভিন্ন দোকানে ঘুরে চালের ক্রয়মূল্যের সঙ্গে বিক্রয়মূল্য মিলিয়ে দেখেন। পরে একটি খুচরা দোকানে দামের সামঞ্জস্যতা না পেয়ে অতিরিক্ত দাম কমানোর নির্দেশ দেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, তদারকি টিম নিউমার্কেটের এলাকার নিউ সুপার মার্কেটের ডি ব্লকের নিচতলার চালের দোকানগুলো ঘুরে দেখছেন। এসময়, দোকানিদের কাছ থেকে পাইকারিভাবে রাইস মিল বা এজেন্সি থেকে সংগ্রহ করা চালের রশিদ ও বিক্রয়ের রেজিস্ট্রার মিলিয়ে দেখেন তারা। পরীক্ষা করেন চাল বিক্রির লাইসেন্সও। সতর্ক করেন অতিরিক্ত মজুতের ব্যাপারে। পরে রহিম রাইস এজেন্সি নামের একটি দোকানে পাইজাম চাল ৫৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখেন। অথচ ভাউচার যাচাই করে দেখা যায় এই চালের ক্রয় মূল্য ৪৯ টাকা। পরে নতুন করে ৫২ টাকা কেজি দরে পাইজাম চাল বিক্রির নির্দেশনা দেন উপসচিব।
আরও পড়ুন
তবে পাইকারিভাবেই বাড়তি দাম দিয়ে চাল আনতে হচ্ছে এমন কথা বলেন ওই দোকানের ব্যবসায়ী আল আলামিন। তিনি দাবি করেন, অতিরিক্ত দামে চাল কিনে আবার আড়তদারদের টাকা দিতে হয়। লেবার ও পরিবহন খরচ আছে। সেজন্য প্রতি কেজিতে আড়াই টাকা বা তিন টাকা লাভ না করলে লোকসান হয়ে যায়। তবে নির্দেশনা অনুযায়ী, কর্মকর্তাদের নির্ধারণ করে দেওয়া দামেই চাল বিক্রি করবেন বলেও তিনি অঙ্গীকার করেন।
অপরদিকে নিয়মিত তদারকের ফলে বাজারে অতিরিক্ত দাম রাখা এবং অতিরিক্ত মজুত করার বিষয়টি একেবারে নেই বলে মন্তব্য করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, বাজার তদারকির এই অভিযান নতুন কিছু নয়। সারা বছরই কমবেশি এমন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তবে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আবারও তদারকি জোরদার করা হয়েছে। আজ আমরা এখানে নিউ সুপার মার্কেটের চালের দোকানগুলো ঘুরে দেখেছি। এখানে অতিরিক্ত মজুত পাওয়া যায়নি। এখানে বড় বিষয় হলো প্রত্যেকেই এখন সচেতন হয়েছেন এবং সবার কাছেই আমরা লাইসেন্স পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা একটি বার্তা দিতে এসেছি। সেটি হলো প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জায়গা থেকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। আমরা খুচরা দোকানিদের বলছি, যে দামে চাল কিনবে তার থেকে সর্বোচ্চ ২ টাকা লাভ করার জন্য। এর বেশি যেন কেউ লাভ না করেন। এখানে একজনকে আমরা পেয়েছি যিনি ৪-৫ টাকা লাভে চাল বিক্রি করছিলেন। পরে সেটি সাথে সাথেই কমানো হয়েছে।
তদারকি কার্যক্রমে উপস্থিত খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মঈনউদ্দীন বলেন, মার্কেট কমিটির ও সংশ্লিষ্ট দোকানদারসহ সবার সঙ্গে কথা বলে আমরা বলে দিয়েছি যেন অতিরিক্ত দাম না নেওয়া হয়। একইসঙ্গে কোনো দোকানেই অস্বাভাবিক মজুত বা সিন্ডিকেট পাওয়া যায়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়া, অভিযানে বিভিন্ন অসংগতি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হলেও কাউকে জরিমানা বা অন্য কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি।
আরএইচটি/জেডএস