বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা উভয়ে আমাদের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করার বিষয়ে একমত হয়েছি এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করব বলে আলোচনা করেছি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করা এবং সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বাণিজ্য আরও বিস্তৃত করার জন্য আমেরিকান বিনিয়োগের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করব বলে আলোচনা করেছি।

হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের নানা বিষয়ে সম্পর্ক আছে। আমরা জঙ্গি দমন, উগ্রবাদ মোকাবিলায় দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। সেটাকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে ভবিষ্যতে কাজ করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। মোদ্দা কথা হচ্ছে, আমরা উভয় দেশ সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করতে আমাদের বাণিজ্য আরও বিস্তৃত করতে এবং অন্যান্য সবক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করব বলে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছি।

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে পর্যবেক্ষণ করতে এসেছে, সে বিষয়টাও আলোচনা করেছি। বাংলাদেশে একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে। এ সমস্ত বিষয় আলোচনা হয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ আলোচনায় এসেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করেছি। রোহিঙ্গাদের ফেরাতে সবসময় তাদের সহযোগিতা চেয়ে এসেছি। আজকে সেটি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছি। সেই লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করব বলে একমত হয়েছি।

সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচন প্রসঙ্গ কার দিক থেকে তোলা হয়েছে এমন প্রশ্ন রাখা হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে নানা দেশের নানা মত ছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তারা নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। আমরা একযোগে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। এ ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিজে থেকে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্নের অবতারণা করেননি। বরং আমি তাদের দেশ থেকে পর্যবেক্ষক আসায় তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তিনি নিজে থেকে এ বিষয়ে (নির্বাচন প্রসঙ্গ) কোনো কথা শুরু করেননি বা প্রশ্ন তোলেননি। আমি নিজে থেকে বলেছি, ভালো একটা নির্বাচন হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নৈরাজ্য, অগ্নি-সন্ত্রাসের কথা এসেছে। ৫ তারিখে তারা পেট্রোল বোমা জ্বালিয়ে একটি পরিবারকে মেরেছে, বহু মানুষ মেরেছে, ট্রেন জ্বালিয়ে দিয়েছে। আর ধারাবাহিকভাবে কাজগুলো করছে- এ বিষয়টা অবতারণা করতে গিয়ে এটা (নির্বাচন প্রসঙ্গ) এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা এবং সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রে তেল অনুসন্ধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের সমুদ্রে প্রচুর তেল আছে সেটা আমেরিকান একটি কোম্পানি অনুসন্ধান করেছে। এটি উত্তোলন করতে পারলে আমাদের দেশ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা কিছুটা আছে। সেটা নিয়েও আলোচনা করেছি।

র‌্যাবেব নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে।

নিষেধাজ্ঞা বা পশ্চিমা অস্বস্তি কাটল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, উভয় দেশ আমাদের সম্পর্কটাকে আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আরও কাজ করতে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি।

এনআই/এসএম