প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি পরাজয়ের ভয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা জনগণের কাছে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে ক্ষমতায় আসার জন্য অন্ধকার গলি খুঁজছে। তারা জানে জনগণ তাদের বর্জন করেছে। এ কারণেই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না। তাই, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে ক্ষমতা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দানকালে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন নির্বাচনে আলোর পথ এড়িয়ে অন্ধকারের গলির দিকে তাকিয়ে আছে। ষড়যন্ত্র এখনো চলছে। তারা এখন নির্বাচন বাতিলের দাবি করছে।

২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল। অপরদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৩৩টি আসন পেয়েছিল। তখন থেকেই তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায় না। তারা বাস, লঞ্চ এবং ট্রেনে আগুন লাগিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। তারা যত বেশি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসন্ত্রাস করবে, জনগণ ততবেশি তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

তিনি আরও বলেন, কাজেই তারা জানে যে, জনগণ বিএনপি-জামায়াত জোটকে বর্জন করেছে। সে জন্য নির্বাচন করতে চায় না। এজন্যই নির্বাচন বানচাল করে কীভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায় তারা সেই পথ খুঁজে বেড়ায়। তারা অন্ধকার গলি খুঁজে বেড়িয়ে আলো ঝলমল নির্বাচন আর জনগণের পথ হারিয়ে ফেলে। তারা নিজেরা অফিসে তালা দেয়, আবার নিজেরাই ভাঙ্গে। এ নিয়ে আবার গর্ববোধ করে যে, চাবি হারিয়েছে। চাবি গেল কোথায়? তালাতো তাদেরই দেওয়া ছিল। তাদের চাবি খোয়া যাবে, চাবি হারাবে এবং তারা পথও হারাবে। তারা পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে। 

সরকারপ্রধান বলেন, তাদের একটাই দক্ষতা আছে, অগ্নিসন্ত্রাস, বাসে আগুন, লঞ্চে ট্রেনে আগুন দেওয়া, রেলের লাইন খুলে দিয়ে, রেলের পাত খুলে ফেলে মানুষ হত্যা করা। মানুষ মারার ফাঁদ পাতায় তারা ওস্তাদ। তাদেরকে জনগণ শুধু নির্বাচন নয়, বারবারই তারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং হারার ভয়েই নির্বাচন করেনি। কিন্তু জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। 

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে রয়েছি। সেখানে নারী হত্যা ও শিশু হত্যা হচ্ছে, যা গণহত্যার শামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দাও জানিয়েছি। কিছু সহযোগিতাও পাঠানো হয়েছে এবং আরও পাঠানো হবে। তিনি এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধের জন্য বিভিন্ন ফোরামে, যখনি বিদেশে গিয়েছেন কথা বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন।

বিশ্বে চলমান অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন ফোরামে যেখানে কথা বলেছি, সেখানেই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে এই অস্ত্রের টাকা শিশুদের খাদ্য, শিশুদের চিকিৎসা এবং তাদের শিক্ষার জন্য ও মানবকল্যাণে ব্যয় করার কথা বলেছি।  যেসব দেশ অস্ত্রের জন্য টাকা ব্যয় করছে, সেগুলো তো সে দেশের জনগণ যে ট্যাক্স দেয়, সেই ট্যাক্সেরই টাকা। কাজেই তাদের টাকা ধ্বংসের জন্য কেন ব্যয় হবে?

প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা যদি অনলাইনে ব্যাংকিংয়ের সুযোগ নিয়ে টাকাটা পাঠায়, তাহলে যেটুকু পরিবারের জন্য খরচ হবে... বাকিটা তার অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে এবং নিজেরও একটা ভরসার জায়গা থাকবে। তিনি তার সরকারের চালু করা সার্বজনীন পেনশন স্কিম এবং প্রবাসী পেনশন স্কিম গ্রহণ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।

সূত্র : বাসস

কেএ