ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় চট্টগ্রামের সাংবাদিক ফারুকের জামিন
চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানায় দায়ের হওয়া ডিজিটাল আইনের একটি মামলায় জামিন পেয়েছেন চট্টগ্রামে কর্মরত সাংবাদিক ফারুক আবদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির শুনানি শেষে তাকে জামিন দেন।
বিজ্ঞাপন
ফারুক আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বদেশের সিনিয়র রিপোর্টার। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মেজবাহ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, শুনানি শেষে আদালত সাংবাদিক ফারুককে দশ হাজার টাকার বন্ডে তিন মার্চ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১ আগস্ট সাংবাদিক ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বাঁশখালী উপজেলার আওয়ামী লীগ কর্মী মোরশেদুর রহমান। এতে ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তৎকালীন বাঁশখালীর এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর ভাবমূর্তি সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সম্মান ক্ষুণ্ন করাসহ কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করার অভিযোগ করা হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফারুক তার ফেসবুক থেকে পোস্ট করে বলেন ‘‘এমপি ও কতিপয় চেয়ারম্যানের কললিস্ট চেক করলে বেরিয়ে আসবে বড় আব্বুকে ‘গার্ড অব অনার’ না দেওয়ার নেপথ্যের কাহিনি। আওয়ামী লীগ নামধারী রাজাকারদের মুখোশ উন্মোচন করা হোক।’’
একই আইডি থেকে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই দুপুর ২টা ৩৬ মিনিটে পোস্ট করা হয় যে, ‘‘১০ মিনিট পর পর এমপি কাদেরকে ফোন করে ‘গার্ড অব অনার’ না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন, জাতি তা জানতে চায়।’’
এরপর এমপির মৌখিক নির্দেশে আওয়ামী লীগ কর্মী মোরশেদুর আইনানুগ ব্যবস্থার আশ্রয় নিয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। মামলার সঙ্গে ফারুকের সেই পোস্টের স্ক্রিনশটের কপিও সংযুক্ত করা হয়।
মামলা দায়েরের পর তা নিয়ে চট্টগ্রামে প্রতিবাদ করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। তখন মামলাটির বিষয়ে ‘দেখবেন’ বলে মৌখিক আশ্বাস দেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন। তখন তারা আন্দোলন না করতে সাংবাদিক অনুরোধ জানান।
মামলা দায়েরের পর বাঁশখালী থানার এসআই নাজমুল হক এর দায়িত্ব পান। এরপর তদন্তভার নেন তৎকালীন এসআই প্রদীপ চক্রবর্তী। ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর ফারুক আব্দুল্লাহকে পলাতক দেখিয়ে চার্জশিট জমা দেন প্রদীপ।
আদালতে দেওয়া চার্জশিটে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ‘আসামি আবদুল্লাহ আল ফারুক এমপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে মনগড়া, ভিত্তিহীন, কুরুচিপূর্ণ লেখা ফেসবুকের আইডিতে পোস্ট করে তার ভাবমূর্তি এবং সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে তার সম্মান ক্ষুণ্ন করেছেন। এতে হাজারো নেতাকর্মী হতবাক ও মর্মাহত হয়েছে, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫ (১), ২৯ (১) ও ৩১ (১) ধারায় অপরাধের সত্যতা প্রমাণিত হয়।’
এ ছাড়া তিনি উল্লেখ করেন, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ফরেনসিক পরীক্ষায় এর সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি সাংবাদিক ফারুককে পলাতক দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করতে আদালতে প্রার্থনা জানান।
এমআর/কেএ