সড়কে বেড়েছে গাড়ির চাপ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ চলছে। ১৪ তারিখ থেকে শুরু হওয়া বিধিনিষেধে জনসাধারণকে ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। কার্যকরের প্রথম দিকে রাজধানীর সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম থাকলেও এখন তা বেড়েছে।

রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দেখে বুঝার উপায় নেই যে সরকারের বিধিনিষেধ চলছে। অন্যান্য দিনের চেয়ে প্রধান প্রধান সড়কে গাড়ির চাপ ছিল অনেকটা বেশি।

ওষুধ কেনা, বাজার করা, টাকা তোলা সহ নানা অজুহাতে কম বা বেশি প্রয়োজনীয় যেকোনো কাজেই মানুষজন এখন বের হচ্ছে ঘর থেকে। সকালে মানুষের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার  সঙ্গে সঙ্গে অলিগলি থেকে প্রধান সড়কে মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

রাজধানীর আসাদগেট, রাসেল স্কয়ার, কলাবাগান, পান্থপথ সিগন্যাল ও এর আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এসব এলাকার সড়ক এবং বাজার গুলোতে মানুষের সরব উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি। কারণে-অকারণে বের হওয়া এসব মানুষজনের মধ্যে অনেকেই আবার রাস্তায় এবং মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। 

পুলিশি ঝামেলা বিবেচনায় অনেকে সঙ্গে রাখছেন প্রেসক্রিপশন কিংবা বাজারের ব্যাগ। শুক্রাবাদ কাঁচাবাজারের পাশে দাঁড়িয়ে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিচ্ছিলেন ছয় থেকে সাত জন মধ্যবয়সী ব্যক্তি। যেখানে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া নিষেধ, তারপরও স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে কেন আড্ডা দিচ্ছেন- এমন প্রশ্নে হাসিব বিল্লাহ নামের এক ব্যক্তি হাতের ব্যাগ দেখিয়ে বললেন, বাজার করতে এসেছি। এমনিতে সচরাচর ঘর থেকে বের হই না। আজ অনেকদিন পর সবার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, তাই একটু কথা বলে নিলাম।

ছোট যান ও ব্যক্তিগত যানগুলো অলিগলি দিয়ে চলাচল করছে। তবে প্রধান প্রধান সড়কে জোরদার করা হয়েছে পুলিশের তল্লাশি। এছাড়াও মানুষকে সচেতন করতে থানা পুলিশের টহল গাড়ি থেকে মাইকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে এবং অযথা বাইরে ঘোরাফেরা না করতে বলা হচ্ছে।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রাসেল স্কয়ারে কর্তব্যরত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক মাহফুজ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে গাড়ির চাপ অনেক বেশি। বিশেষ করে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়েছে। অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে বের হচ্ছেন। অনেকেই আবার মুভমেন্ট পাস ছাড়া বের হচ্ছেন। আমরা সবার কাছেই বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাচ্ছি। যারা উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারছেন তাদের যেতে দিচ্ছি। আর যারা উপযুক্ত কোনো কারণ দেখাতে পারছেন না, তাদের জরিমানা ও শাস্তির আওতায় আনছি।

এদিকে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোর পাশে থাকা দোকান বন্ধ থাকলেও ভেতরের সড়কগুলোতে দোকানপাট খোলা ছিল। দোকানিরা টহল পুলিশের উপস্থিতিতে দোকান বন্ধ করলেও পুলিশ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আবার খুলে দিচ্ছেন। 

কলাবাগান বশির উদ্দিন লেনের দোকানি গোলজার মোল্লা বলেন, সকাল নয়টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি রয়েছে। তারপরও পুলিশ এসে একটু পরপর দোকান বন্ধ করতে বলে। কিছু ক্রেতার কারণে এমন সমস্যা হচ্ছে। অনেক ক্রেতাই আছেন যারা সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। এখনও ঠিকমতো মাস্ক না পরেই ঘোরাফেরা করছেন। যার ফলে পুলিশ এসে আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) ঠাকুরদাস মালো ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখনও মানুষজন সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ। অনেকেই অযথাই ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন এবং জটলা করে আড্ডা দিচ্ছেন। বিশেষ করে এলাকার তরুণরা এই কাজটি বেশি করছেন। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেন সরকার নির্দেশিত নিষেধাজ্ঞাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর হব।

 আরএইচটি/আরএইচ