ভাড়া কম থাকায় ট্রাক ও পিকআপে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন অধিকাংশ যাত্রী

সরকার ঘোষিত সাত দিনের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পঞ্চম দিনেও ঢাকা ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় শুরুতে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস বা মোটরসাইকেলে করে ঢাকা ছাড়েন অনেক যাত্রী। তবে ভাড়া বেশি হওয়ায় এখন অনেকেই ট্রাক ও পিকআপে করে ঢাকা ছাড়ার চেষ্টা করছেন। এসব যানবাহন দেখলে যাত্রীরা হাত উঁচিয়ে চালককে জিজ্ঞাস করছেন ভাই কই যাবেন?

রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর উঁচিয়ে আমিনবাজার এলাকায় ঘুরে এ চিত্রই দেখা গেছে। যাত্রীরা বলছেন, ট্রাক বা পিকআপ ভাড়া অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় অনেক কম। তাই কম টাকায় বাড়ি যাওয়ার ভরসা এসব পরিবহন।

গাবতলী গরুর হাট সংলগ্ন এলাকার আশেপাশে দেখা গেছে পুলিশের কড়া নজরদারি। একটু পরপর বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। এজন্য পুলিশের আটক থেকে বাঁচতে যাত্রীরা গাবতলী থেকে সামনে গিয়ে আমিন বাজার ব্রিজের উপরে দাঁড়িয়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ও পিকআপের জন্য অপেক্ষা করছেন।

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বেশি ভাড়া আদায় করছেন মোটরসাইকেল চালকরা

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশের চেকপোস্ট থাকায় গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে আমিন বাজার ব্রিজের আগ পর্যন্ত কোনো ধরনের পরিবহন যাত্রী উঠানামা করাচ্ছে না। কারণ পুলিশ ধরতে পারলে সঙ্গে সঙ্গে তিন হাজার টাকার মামলা দিচ্ছে। এজন্য আমিনবাজার ব্রিজের ওপর থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। পাশাপাশি রয়েছে রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাও।

আমিন বাজার ব্রিজের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী আহাম্মদ আলী ট্রাক থামানোর চেষ্টা করছেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি যাবো বাগেরহাট। করোনার কারণে দেশে লকডাউন চলছে। শুনেছি লকডাউন আরও বাড়তে পারে। তাই ঢাকায় থেকে কী করব? সামনে আবার ঈদ। এজন্য এখনই ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছি। গাবতলী এসে কয়েকটি প্রাইভেটকার পেলাম। ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত জনপ্রতি ভাড়া চাচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। আমার কাছে অনেক বেশি মনে হচ্ছে। এছাড়া মোটরসাইকেলে জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা চাচ্ছে। এতো টাকা দিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। তাই ট্রাক বা পিকআপের জন্য অপেক্ষা করছি। এইসব পরিবহনে কিছুটা কম ভাড়ায় যাওয়া যাবে।

পুলিশ চেকপোস্ট পাড়ি দিয়েই গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা

আমিনবাজারে অপেক্ষা করা এক যাত্রী সিদ্দিক বলেন, লকডাউনের কারণে গণপরিবহন চলছে না। এদিকে সামনে ঈদ। শুনেছি লকডাউন আরও বাড়তে পারে। তাই আগেভাগেই বাড়ি চলে যাচ্ছি। বাস চলছে না এজন্য আমিনবাজার থেকে ভেঙে ভেঙে আরিচা ঘাট পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করছি। অটোরিকশায় করে সাভার যাবো। সাভার থেকে অটোরিকশা-লেগুনা পাওয়া যায় শুনেছি। এসব পরিবহনে গেলে ভাড়া কিছুটা কম। তাই ভেঙে ভেঙে কষ্ট হলেও চলে যেতে পারব।

তিনি বলেন, বাস না চলায় প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল চালকরা যাত্রীদের জিম্মি করেছে। এ সুযোগ নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারা। 

এসআর/এসকেডি