রেজিস্ট্রেশনহীন বাইকে যাচ্ছেন আন্ডার গার্মেন্টসের খোঁজে
মুভমেন্ট পাস নেই; যে মোটরসাইকেলে বেরিয়েছেন সেটিরও নেই রেজিস্ট্রেশন। আবার বাইরে বের হওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করলেন ‘আন্ডার গার্মেন্টস’ (অন্তর্বাস) কিনতে যাচ্ছেন!
এমন কাণ্ড ঘটেছে রাজধানীর গাবতলীর পুলিশ চেক পোস্টে। সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যে ‘জরুরি প্রয়োজন’ অজুহাত দিয়ে আন্ডার গার্মেন্টস কিনতে যাচ্ছিলেন এক তরুণ। পথে দারুস সালাম এলাকায় তাকে থামান ট্রাফিক সার্জেন্ট নূরনবী। বিনা কারণে ঘর থেকে বের হওয়ায় এবং রেজিস্ট্রেশন না থাকায় ওই তরুণের মোটরসাইকেলটি জব্দ করে রেকারে তুলে দেন তিনি। রোববার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১১টায় গাবতলী পুলিশ চেকপোস্টে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের পঞ্চম দিন আজ (১৮ এপ্রিল)। আগের চারদিনের তুলনায় আজ রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বাইরে বেরোনোর অজুহাতও। এছাড়া কর্মহীন অনেক দিনমজুর রাস্তায় বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে। অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক মানুষকে হেঁটে আমিনবাজার ব্রিজ পার হতেও দেখা গেছে।
সকালে রাজধানীর মিরপুর রোড এবং গাবতলী চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়, রাস্তায় বিপুলসংখ্যক প্রাইভেটকার চলাচল করছে। একই সঙ্গে পণ্যবাহী গাড়ি ও মোটরসাইকেলের চাপও রয়েছে। রাস্তায় বেড়েছে রিকশার সংখ্যাও। ঘর থেকে যেমন প্রয়োজনে বের হচ্ছে মানুষ, তেমনই নিছক লকডাউন দেখতে বা সামান্য অজুহাতে বের হওয়া মানুষও আছে।
সোয়েটার কোম্পানিতে চাকরি করা আব্দুর রহমান তেমনই একজন। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর ঢাকা পোস্টের কাছে তিনি স্বীকার করেন পঙ্গু হাসপাতালের সামনে থেকে জাঙ্গিয়া কিনতে বেরিয়েছেন তিনি। রাস্তায় কোনো গণপরিবহন নেই, তাই রেজিস্ট্রেশনহীন বাইক নিয়েই বের হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সার্জেন্ট নূরনবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘মানুষের হাত তিনটি। তার একটি আপনি এখন নিজ চোখেই দেখলেন।’
তিনি বলেন, আজ অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় গাড়ির একটু চাপ বেশি। এই পথ দিয়ে যেসব গাড়ি ঢাকা ত্যাগ করছে তাদের বেশিরভাগেরই গন্তব্য সাভার, আশুলিয়া ও বাইপাইল। বেশিরভাগ গাড়ি ছিল গার্মেন্টস ওয়ার্কারদের।নির্দেশনার বাইরে যাদের গাড়ি পাচ্ছি তাদেরকে মামলা দেওয়া হচ্ছে এবং ফেরত পাঠানো হচ্ছে। সকাল ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনটি গাড়িকে মামলা করা হয়েছে। ওই তিনটি গাড়িসহ মোট দশটি গাড়ি আমি ফেরত পাঠিয়েছি।
রাস্তা ঘুরে আরও দেখা যায়, রাজধানীর ভেতর অল্প দূরত্বের গন্তব্যে চলাচল করছে রিকশা। পুলিশ কোনো কোনো রিকশাচালককে ধরে শাস্তিও দিচ্ছে। তবে জনসমাগম বেড়ে যাওয়ায় রিকশাচালকরা যাত্রীদের নিতে দ্বিধা বোধ করছেন না। পেটের তাগিদে বাধ্য হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছেন দিনমজুররাও।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সামনে পুলিশ চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা শেরেবাংলানগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর আশীষ সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ দেখলাম মেইন রোডে রিকশার সংখ্যা বেড়েছে। ব্যক্তিগত যানবাহনও আছে। আমরা এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত যানবাহন চেক করে দেখেছি, যেসব পেশাজীবীদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদেরই গাড়ি ওগুলো। আমরা জিজ্ঞেস করলে তাদের অফিশিয়াল আইডি কার্ড বা মুভমেন্ট পাস দেখাচ্ছে। অন্যান্য দিনের চেয়ে আমার মতে কিছুটা বেশি গাড়ি চলাচল করছে।
এমএইচএন/এইচকে/জেএস