দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ফলে জাপাকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ১৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা। আর এতে চলমান একাদশ সংসদ থেকে অর্ধেকের কম প্রার্থী নিয়ে দ্বাদশ সংসদে যেতে হবে জাপাকে।

বর্তমান একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ২৩ জন প্রার্থী রয়েছে। আর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির মাত্র ১১ প্রার্থী জয়ী হতে পেরেছেন। দলটির হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, যিনি ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তাকে ছাড় দিয়ে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তারপরও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে হেরে যায় শেরিফা কাদের।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, জাপার জয়লাভ করা প্রার্থীরা হচ্ছেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের (রংপুর-৩), মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্চ-৩), কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২)। তাদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদার ও আশরাফুজ্জামান ছাড়া বাকিরা বর্তমান সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন।

জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদের সংসদ সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন– সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, পনির উদ্দিন আহমেদ, আহসান আদেলুর রহমান, রানা মোহাম্মদ সোহেল, শরিফুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, নাসরিন জাহান, নুরুল ইসলাম তালুকদার। এর বাইরে রওশন এরশাদ ও সাদ এরশাদ নির্বাচনে অংশ নেননি। আর দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।

জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এবার ২৮৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। ১১ জন প্রার্থী নিজে থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। আর নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাইয়ের পর শেষ পর্যন্ত টিকে থাকেন ২৬৫ জন প্রার্থী। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দল থেকে আর্থিক সুবিধা না পাওয়ার কারণে নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকে ভোটের আগের দিন পর্যন্ত ১৯ জন সরে দাঁড়ান। শেষ পর্যন্ত ভোটে ছিলেন ২৪৬ জন।

এএইচআর/এসএসএইচ