নির্বাচনে সহিংসতার অভিযোগে ৯ আসনের ২১ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দিনভর নানান অনিয়ম ও সহিংসতার অভিযোগে সারাদেশের মোট ৯টি আসনের ২১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের বেশি ব্যক্তিকে সাজা দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
রোববার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
ভোট স্থগিত হওয়া কেন্দ্রগুলো হলো—
সুনামগঞ্জ-২ : মিরাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় (৭ নং কেন্দ্র), নোয়াগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৫৬ নং কেন্দ্র), শুকুরনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় (৭০ নং কেন্দ্র)।
কক্সবাজার-১ : চরনদীপ ভূমিহীন প্রাইমারি স্কুল (২৫ নং কেন্দ্র), দক্ষিণ ফুল ছুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৭৪ নং কেন্দ্র), মরংগুনা অসুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৮০ নং কেন্দ্র)।
জামালপুর-৫ : জাগির মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৭০ নং কেন্দ্র)।
নরসিংদি-৪ : ইব্রাহীমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪ নং কেন্দ্র)।
নরসিংদী-৩ : দুলালপুর সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা ( ৫ নং কেন্দ্র), ভিটিচিনাদি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ( ৮ নং কেন্দ্র)।
টাঙ্গাইল-২ : কাহেতা সরকারি প্রাথমিক স্কুল (১৬ নং কেন্দ্র)।
কুমিল্লা-৩ : ৭৬ নং গুর্গারাম (ডি.আর) পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (৭৬ নং কেন্দ্র), ধনিরামপুর ডিডিএসওয়াই উচ্চ বিদ্যালয় ( ৮১ নং কেন্দ্র)
কুমিল্লা-৪ : সূর্য্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৮৪ নং কেন্দ্র)।
কুমিল্লা-১১ : ২৮ নং কেন্দ্র। বগৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (২৮ নং কেন্দ্র), গোবিন্দপুর সামছুল হুদা দাখিল মাদ্রাসা (৩৫ নং কেন্দ্র), ধনিজকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (৩৮ নং কেন্দ্র),আমানগন্ডা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (৪৯ নং কেন্দ্র), হিংগুলা হাছানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় -১ (৭৪ নং কেন্দ্র), হিংগুলা হাছানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় -২ (৭৫ নং কেন্দ্র),বাতিসা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়-১ (৮৩ নং কেন্দ্র)।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮টি দল এবারের সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তবে দেশের বড় রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও এ নির্বাচন বয়কট করেছে বিএনপি। দলটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ একাধিক দাবিতে নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
এছাড়া নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণ ফোরাম, গণফ্রন্ট, জাকের পার্টি, জাতীয় পাটি, জাতীয় পার্টি-জেপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, তৃণমূল বিএনপি, ন্যাশনাল পিপলস পাটি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল) ও গণতন্ত্রী পার্টি প্রার্থীর নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রোববার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়া বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনে আজ ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনে পরে ভোট নেওয়া হবে। এবার ভোট নেওয়া হয়েছে ব্যালট পেপারে।
নির্বাচনী লড়াইয়ে ছিলেন মোট ১৯৭১ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ জন ২৮টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী। বাকি ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৬ জন। জাতীয় পাটির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন ভোটের মাঠে ছিলেন।
নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ আর ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী ভোটার। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। সারা দেশে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ১০৩টি, আর ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।
ভোটগ্রহণ চলাকালে যশোর, লালমনিরহাট, বগুড়া, রাজধানীর হাজারীবাগসহ কিছু জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় শিশুসহ অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম, জামালপুর, ফরিদপুরসহ আরও কয়েকটি জেলায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ২২ জন।
ঢাকা-১৩ আসনে মোট ভোটার ৩,৯৫,৪৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২,০৩,৭৪১ জন, নারী ভোটার নারী ভোটার ১,৯১,৬৮৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৬ জন।
আরএইচটি/এমএসএ