এ নির্বাচনের পর বিরোধী দল কে হবে, সরকার কে হবে তা আগে থেকেই অনুমান করা যাচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে আপনারা বিব্রত কি না– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, এটা আমাদের বিষয় নয়। নির্বাচন হলে তারাই সংসদে সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা এজন্য মোটেও বিব্রত নই।

শনিবার (৬ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রেও আগুন দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। যারা হরতাল দিয়েছে তারাও বলেছিল তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে তারা ভোটবিরোধী প্রচারণা চালাবে। তবুও নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সর্বাত্মক চেষ্টা হচ্ছে। তবে কোনো একটা বিরোধী পক্ষ ভোট বর্জনের পাশাপাশি প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। আশা করি তবুও ভোটাররা আসবে। 

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আগুন দেখে আমরা দুঃখ ভারাক্রান্ত। কোনো দল যদি এটি করে থাকে, এটি অমার্জনীয় অপরাধ বলে মনে করি।

তিনি বলেন, ইসির একজন কর্মকর্তাও ভোটগ্রহণে সম্পৃক্ত থাকবেন না। সেই ভোটগ্রহণে যদি কারচুপি হয়, কিছু দায়ভার আমাদের ওপর আসবে। কেন্দ্রে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী প্রিজাইডিং অফিসার। তার দায়িত্ব বারবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে মিডিয়ার অবাধ অধিকার থাকবে। তাদেরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেকে সিলেকশন বলছেন, শুধু সিলেকশন নয়, আরও কিছু বলছেন। আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের কাজ হচ্ছে নির্বাচন আয়োজন করা, রাজনৈতিক বিতর্কে সম্পৃক্ত হওয়া আমাদের কাজ নয়।

আরেক প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আট লাখের বেশি সদস্য ভোটগ্রহণের সময় ভোটারদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আছে। বড় দল ভোট বিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ হলে আমরা কিছু মনে করব না। ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য বলবে, সেটা অপরাধ। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ।

মার্কিন ভিসানীতির বিষয়ে জাপানি এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা কমিশনের দায়িত্ব নয়, কে অংশ নেবে। কমিশন সবাইকে আহ্বান জানাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য। তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিশ্বাস করে। যারা এক্ষেত্রে বাধা তাদের ওপর এ নীতি প্রয়োগ করবেন। আমরা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করছি না। আমরা জানি না কারা আগুন দিচ্ছে, মানুষ হত্যা করছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের চেষ্টা করছি। আমরা এটা নিয়ে চিহ্নিত নই। কারণ এটা আমাদের বিষয় নয়। ভিসা কী, পাসপোর্ট কী, অর্থনীতি কী তা আমি বুঝি না। এটা বোঝে পররাষ্ট্র দপ্তর।

সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন হচ্ছে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বডি। আমি বলতে চাই, আমরা বিশ্বাস করি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছতামূলক নির্বাচন। স্থানীয়ভাবে কেবল নয়, আমরা আন্তর্জাতিকভাবে পর্যবেক্ষণ হোক, সেটা চাই।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/এসএসএইচ