পরিকল্পিতভাবেই রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশন) খ. ড. মহিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, এটি কারা ঘটিয়েছে তা এখনই বলা যাবে না। তবে এটি যে নাশকতা সেটি স্পষ্ট। কারণ, বোঝাই যাচ্ছে পরিকল্পিতভাবে এই নাশকতা করা হয়েছে।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোপীবাগ এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শকে এসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

মহিদ উদ্দিন বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সাধারণ মানুষ, যাত্রীদের প্রতি, শিশু, নারীদের প্রতি এ ধরনের অমানবিক ও সহিংসতা, মানুষ পুড়ে মারা এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোনো মানুষ এটা গ্রহণ করতে পারে না। এই কাজ যারা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

চারটি বগি এখান থেকে আলাদা হয়ে স্টেশনে চলে গেছে। ছয়টি বগি এখানে থেকে যায়। ট্রেনের পাওয়ার জেনারেট করার জন্য পাওয়ার কার বগিসহ তিনটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আগুনের কোনো ধরনের উপাদান পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন প্রথম কাজ হচ্ছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা। যেটা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা করেছে। জীবন বাঁচানো তাদের প্রথম কাজ। সেটা তারা করেছে। আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি), রেলওয়ে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব আনসারসহ সকলে এসেছে। আমাদের তদন্তকারী কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে এসেছেন। এখন ফায়ার সার্ভিস বগির ভেতরে সুইপ করছে। আমাদের যে তদন্তকারী কর্মকর্তারা আছেন তারা এখন থেকে যে আলামত সংগ্রহ করবেন। আমরা চেষ্টা করব কি কারণে আগুন লেগেছে সেটি জানার জন্য।

তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনের ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। এর মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এমন ঘটনার প্রি-প্রোটেকশন কি নেওয়া হবে না? জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, প্রস্তুতি নেওয়া আছে বলেই কিন্তু নাশকতাকারী যত ঘটনা ঘটাতে চায়, আপনি দেখবেন যে গত ১৫ দিনে কতগুলো ঘটনা আমরা ডিজমেন্টাল করেছি। নাশকতাকে নীরবে প্রতিহত করেছি তার কোনো হিসাব নেই। কিন্তু তারা যেটি ঘটাতে পেরেছে। নাশকতাকারীরা কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে৷ নাশকতাকারীরা কিন্তু তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে, চিহ্নিত হয়েছে। তাদের দশ বা ১০০ নাশকতার প্রচেষ্টার একটা সফল হয়।

হরতালের আগেই নাশকতার এমন চেষ্টার বিষয় তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে ভয় ছড়ানো। সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিঘ্নিত করতেই এই নাশকতা করে। একটি জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা পরিকল্পিত নাশকতা।

আপনারা বারবার বলছে গোয়েন্দা তথ্যে নাশকতার সম্ভাবনা নেই এমন প্রশ্নের জবাবে মহিদ বলেন,  কোনো কোনো অপরাধ তাৎক্ষণিক ধরা পরে যার নজির আপনারা দেখেছেন। যার সংখ্যা ৪০ এর বেশি। গাজীপুরের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিমানবন্দরের ঘটনায় জড়িতদের বিষয় কাজ চলছে। প্রকৃত রহস্য উদঘাটন দরকার। এটা কখন ১৫ ঘন্টা, ১৫ দিন বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।

বেনাপোল এক্সপ্রেসে বিদেশি যাত্রীর বিষয়ে কোনো তথ্য আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এটা নাশকতা মনে হয়েছে। যাত্রীবেশে হয় তো এটা করেছে। বিদেশি যাত্রীর বিষয়টা জানা নেই। এটা রেলওয়ে পুলিশ বলতে পারবে। এই বগিতে ক্যামেরা ছিল কি না জানা নেই। তবে রেলওয়েকে অনুরোধ করা হয়েছিল ক্যামেরা লাগাতে।

এমএসি/এমএ