দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসনের (চকরিয়া-পেকুয়া) বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্যসহ ১৭ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন। একই আবেদন তারা জেলা প্রশাসক (রিটার্নিং কর্মকর্তা) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (সহাকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা) কাছেও করেছেন। 

নির্বাচন কমিশন বলছে, এই আবেদনে তাদের কিছু করার নেই। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আবেদনটি কক্সবাজার পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে পাঠাবে সংস্থাটি।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সংস্থাটির প্রাপ্তি ও জারি শাখায় এ সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়ে। এতে ১৭ জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি স্বাক্ষর করেছেন। 

আবেদনে তারা বলেন, আমরা কক্সবাজার-১ আসনের অন্তর্গত চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করা নির্বাচন কমিশনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। 

আমরা সেই লক্ষ্যে নিজ নিজ এলাকায় আমাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটারকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি, যা পরোক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যের সহায়ক। কিন্তু পরিতাপের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার নামে আমাদেরকে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির (হাত ঘড়ি) প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

এমনকি ওই বিশেষ প্রার্থীর পক্ষাবলম্বন না করলে অস্ত্র-মাদক উদ্ধার, অফিস পুড়ানোসহ বিভিন্ন মিথ্যা গল্প সাজিয়ে গায়েবি মামলায় জড়িয়ে বা তুলে নিয়ে নির্যাতনের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। এই ধরনের চাপ প্রয়োগ ও অপতৎপরতা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে বড় অন্তরায়। এমন ভীতিকর পরিস্থিতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে জনমনে সংশয় সৃষ্টি করছে এবং আমরা জনপ্রতিনিধিরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এজন্য কক্সবাজার-১ আসনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে জনগণ ও জনপ্রতিধিদের নিরাপত্তা বিধান ও হয়রানি রোধে উল্লেখিত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন, চকরিয়ার হারবাং ইউপি’র মেহরাজ উদ্দিন, পশ্চিম বড় ভেওলা’র সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ১৮ নং কোনাখালী ইউপি’র দিদারুল হক সিকদার, সাহারবিল ইউপি’র নবী হোছাইন চৌধুরী, পূর্ব বড় ভেওলা’র ফারহানা আফরিন মুন্না, ৩নং কৈয়ার বিল ইউপি’র মক্কী ইকবাল হোসেন, ফাঁসিয়াখালী ইউপি’র হেলাল উদ্দিন, ১৭ নং খুটাখালী ইউপি’র মুহাম্মদ আবদুর রহমান, বরইতলী ইউপি’র মোহাম্মদ ছালেকুজ্জামান, চকরিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান-১ জেসমিন হক জেসি, চিরিংগা ইউপি’র জামাল হোসেন চৌধুরী ও কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ শওকত হোসেন।

এছাড়াও পেকুয়ার ২ নং টেটং ইউপি’র চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, ৭ নং শীলখালী ইউপি’র মো. কামাল হোছাইন, উজানটিয়া ইউপি’র চেয়ারম্যান এম তোফাজ্জল করিম ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ তানিয়া আফরিনও জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন।

এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ১৭ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তো সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী নয়। প্রার্থী হলে বিষয়টি আমাদের এখতিয়ার হতো। তারা যেহেতু প্রার্থীর সমর্থক, সমর্থক এখন সারাদেশের অনেক মানুষ। কাজেই‌ আবেদনটি আমরা পুলিশ সুপারের কাছে পাঠিয়ে দেব। কেননা, নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশের।

ওএফএ/এমএসএ