জ্বালানি খাতে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পর্যাপ্ত ডলারের অভাবে তেল সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধ করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এর ফলে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলো জাহাজ বাতিল করায় টান পড়ছে ডিজেল, ফার্নেস অয়েল ও জেট ফুয়েলের মজুদে।

সূত্রের বরাতে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় যাবত ডলার সংকটে রয়েছে জ্বালানি খাত। সংকট নিরসনে অর্থ-বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট ধর্না দিচ্ছে বিপিসি। কিন্তু চাহিদার তুলনায় কম ডলার পাচ্ছে সংস্থাটি। এখন পর্যন্ত জ্বালানি তেল সরবরাহকারী বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশের কাছে বকেয়া ২৪৬ মিলিয়ন ডলার। এগুলোর মধ্যে ইউনিপেক ৮.৪৩ মিলিয়িন ডলার, পিসিএসজি ৫.২৮ মিলিয়ন ডলার, ভিটল ৭৫.০৮ মিলিয়ন ডলার, বিএসপি ৭৫.৭০মিলিয়ন ডলার, পিটিএলসিএল ২৯.১৭ মিলিয়ন ডলার, ইনক ১৪.৪০ মিলিয়ন ডলার ও এনআরএল ৩.২১ ডলার পাবে। 

পাওনাগুলোর মধ্যে অধিকাংশই সোনালি ব্যাংকে আটকে আছে। পাশাপাশি জনতা ব্যাংক, রুপালী ব্যাংক এবং অগ্রণীব্যাংকও ডলার দিতে পারছে না। 

বিপিসি বলছে, কয়েকটি কোম্পানির পাওনা পরিশোধ না করা হলে তেলবাহী জাহাজ পাঠানো বন্ধ করে দেবে।

এ প্রসঙ্গে বিপিসির এক মহাব্যবস্থাপক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আমাদের হাতে টাকা থাকার পরও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে তা খুবই সামান্য। ডলার না থাকায় এলসি খোলা যাচ্ছে না, ফলে তেল আমদানিতে বিঘ্ন ঘটছে।

বাতিল হচ্ছে জাহাজ

সময় মতো পাওনা না পাওয়ায় কয়েকটি তেল সরবরাহকারী কোম্পানি কার্গো বাতিল করেছে। গত অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ৪-৫টি করে জাহাজ বাতিল হচ্ছে। চলতি সপ্তাহেও দুটি জাহাজ বাতিল হয়েছে। এতে ডিজেল, ফার্নেসের পাশাপাশি জেটফুয়েলের মজুদেও টান পড়েছে। 

দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ মেট্রিকটন। এর মধ্যে বিপিসি আমদানি করে ৬৫-৭০ লাখ টন। এর বাইরে বেসরকারি বিদ্যুৎ-কেন্দ্রগুলো নিজেদের প্রয়োজনে ফার্নেস অয়েল আমদানি করে।

ওএফএ/এমএসএ