নৌকার প্রচারণায় পাকিস্তানি নাগরিক, অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর
চট্টগ্রামে-১৫ আসনে (আংশিক সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া) নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর পক্ষে এক পাকিস্তানি নাগরিক প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে ওই পাকিস্তানি নাগরিকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের নির্বাচনী মাঠে এনে নৌকার প্রার্থী নেজাম উদ্দিন নদভী বড় ধরনের হামলা ও নাশকতার পরিকল্পনা করছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব ।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, পাকিস্তানি নাগরিক মোহাম্মদ আমিন নদভী ও নৌকার প্রার্থী আবু রেজা নদভী ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আবু রেজার আমন্ত্রণে তিনি ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসেছেন। এরপর বন্ধু আবু রেজা তাকে চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিও দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে থেকে পাকিস্তানি নাগরিক আমিন নদভী সাতকানিয়ায় আবু রেজার বাড়িতে অবস্থান করছেন। সেখানে থেকে তিনি নির্বাচনী পরিবেশ মনিটরিং করছেন। একইসঙ্গে তিনি কক্সবাজার থেকে আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সাতকানিয়ার মাদ্রাসায় এনে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি ভোটারদের মাঝে ভীতি ছড়ানো ও ভোটের দিন কেন্দ্রে উপস্থিতি কমানোর জন্য নাশকতামূলক পরিকল্পনা নিয়েছেন।
অভিযোগকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মোতালেবের প্রধান সমন্বয়ক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত রোববার (২৪ ডিসেম্বর) আবু রেজা নদভীর বাড়িতে কক্সবাজার থেকে দুটি কালো রঙের মাইক্রোবাস প্রবেশ করে। সেসময় আবু রেজার বাড়িতে পাকিস্তানি নাগরিক আমিন নদভী ছিলেন। এরপর তারা আমিন নদভীর সঙ্গে বৈঠক করে চলে যান। তাছাড়া নির্বাচনকে ঘিরে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় অচেনা সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। তারা ভোটারদের মাঝে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি নাগরিক আমিন নদভীর নেতৃত্বে সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় যেকোনো সময় বড় ধরনের সহিংসতা হতে পারে। তাই বিষয়টি আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি। একইসঙ্গে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) এক মতবিনিময় সভায় বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে নৌকার আবু রেজা নদভী ও স্বতন্ত্র এম এ মোতালেব ছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন আরও পাঁচজন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মুহাম্মদ আলী হোসাইন মোমবাতি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মুহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী হাতঘড়ি, জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ছালেম লাঙ্গল, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ হারুন মিনার ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. জসিম উদ্দিন ছড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হয়েছে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৭ ডিসেম্বর। এরপর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্তির আগের ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন করতে হয়। চলতি সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি। এর আগের ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এমআর/কেএ