৩০ কিমি রাস্তার দেড় শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত
৩০ কিলোমিটার রাস্তার দেড় শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের পর চার চোরকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন– চোরাই কারবারি রিফাত হাসান ভূঁইয়া (২৯), চোর চক্রের সদস্য নুর ইসলাম (৩১), রুবেল খা (২৪) ও মনির মিয়া (২৩)।
বিজ্ঞাপন
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে গুলশান গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চুরি হওয়া সিগারেট, ডিভিআর (সিসিটিভি) ও একটি মিনি ট্রাক।
অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এস এম রেজাউল হক জানান, ফিরোজ মিয়া (৬৫) পেশায় দোকানি। গত ২৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টা থেকে পরদিন ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন মানিকদি আদর্শ বিদ্যানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে সিরাজ মার্কেটের হাসান স্টোর নামক মুদি দোকান ও গোডাউন থেকে প্রায় ১৪ লাখ টাকার সিগারেট চুরি হয়ে যায়। এ ব্যাপারে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা হয়। ঘটনার ছায়া তদন্তে নামে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম।
ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে একটি মিনিট্রাক শনাক্ত করা হয়। শনাক্ত করা মিনি ট্রাককে কালশী ফ্লাইওভার-খিলক্ষেত-কুড়িল ফ্লাইওভার-ক্যামব্রিয়ান কলেজ-মেরুল বাড্ডা ব্রিজ-মেরাদিয়া-ডেমরা স্টাফ কোয়াটার-সারুলিয়া-কাঁচপুর ব্রিজ-মদন চৌরাস্তা-বিসিক শিল্প নগরী মদন পর্যন্ত আনুমানিক ৩০ কিলোমিটার পথ অনুসরণ করে প্রায় দেড় শতাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে মিনি ট্র্যাক থেকে সিগারেট নামিয়ে রিকশায় করে পরিবহন করা রিকশাচালককে খুঁজে বের করা হয়।
আরও পড়ুন
পরে রিকশাচালক চোরাই তেলের ক্রেতা দোকানদার রিফাত হাসান ভূঁইয়াকে (২৯) শনাক্ত করে দেয়। রিফাতের দেখানো মতে তার নারায়ণগঞ্জের নিজ বাসার আলমারি থেকে চোরাই সিগারেট উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।
পরে তার দেওয়া তথ্য মতে তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় নারায়ণগঞ্জ রূপসী থেকে নুর ইসলাম, রুবেল খা ও মনির মিয়া নামে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে চুরির কাজে ব্যবহৃত ট্রাক জব্দ করা হয়।
এডিসি রেজাউল জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে মনির জানায়, ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ভেঙে নরসিংদীর বেলাবো থানাধীন উজিলাবো গ্রামের একটি কুয়ায় ভেঙে ফেলে দিয়েছে। পরে কুয়ার ভেতর থেকে ডিভিআরের ভগ্নাংশ উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, চক্রের গ্রেপ্তার তিনজনই মিনি ট্রাক ড্রাইভার। তারা বাসাবাড়ি ও দোকানের মালামাল পরিবহন করে। মালামাল পরিবহনের সময় তারা দেশের বিভিন্ন এলাকা রেকি করে এবং সুবিধামতো জায়গায় চুরি করে। তাদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রুবেলের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা ও একটি গণধর্ষণ মামলা রয়েছে।
তারা বিগত কয়েক মাসে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, নরসিংদী, ঢাকা মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল, নারিকেল তেল, সাবান, শ্যাম্পু ও দামি ব্র্যান্ডের বিদেশি সিগারেটসহ নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র চুরি করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
লুণ্ঠিত সব মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে রেজাউল বলেন, অবশিষ্ট মালামাল উদ্ধারে ও আর কেউ জড়িত ছিল কি না তা জানতে আজ তাদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
জেইউ/এসএসএইচ