পেশাগত দায়িত্বে বের হওয়া গণমাধ্যমকর্মীদেরও মামলা ও জরিমানা করছে পুলিশ। যদিও পেশাগত দায়িত্বের কারণে জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীরাও চলমান বিধিনিষেধের আওতামুক্ত।

তাহলে পুলিশ কেন নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ এনে সাংবাদিকদের মামলা বা জরিমানা করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিধিনিষেধের প্রথম দিন বুধবারের (১৪ এপ্রিল) পর দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারও (১৫ এপ্রিল) পেশাগত দায়িত্বে বের হওয়া গণমাধ্যমকর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রথম দিন এমন পরিস্থিতির শিকার হন দৈনিক মানবজমিনের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ। পেশাগত কাজে বের হয়ে মামলা হওয়ার বিষয়টি তিনি তার ফেসুবক পোস্টে তুলে ধরেন।

জীবন আহমেদ তার পোস্টে লেখেন, ‘বুঝলাম না ডাক্তার ও সাংবাদিকদের গাড়িতে কেনো পুলিশ মামলা দিচ্ছে, এগুলো তো জরুরি সেবা। আমাকেও চার হাজার টাকার মামলা দিল। আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ছবি তুলতে আগারগাঁওয়ে পুলিশের চেকপোস্টের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। ক্যামেরা বের করার আগেই আমাকে চার হাজার টাকার মামলা ধরিয়ে দেওয়া হলো।’

এ বিষয়ে জীবন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘অন্য সবার সঙ্গে আমাকে লাইনে ফেলে মামলা দিয়ে দিল পুলিশ। আমি সাংবাদিক বলার পরেও আমাকে চার হাজার টাকার মামলা দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন ঢাকা পোস্ট.কম এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাঈদ রিপন। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিজের মোবাইলে ধারণ করার সময় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা তার ফোনটি নিয়ে নেন।

এ বিষয়ে সাঈদ রিপন বলেন, আমি পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। এমন সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে কিছু না বলে মোবাইল ফোনটি নিয়ে যান। যদিও পরে ফোনটি ফেরত দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'ডিএমপির মিরপুর জোনের ডিসি একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। তিনি এটা কেন করলেন বুঝতে পারছি না। তাছাড়া সাংবাদিকদের আটকে রাখা বা মোবাইল নেওয়ার কোনো নির্দেশনা ডিএমপি বা সরকার দেয়নি।'

এদিকে গত দুই দিন ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শাহবাগ ও জাহাঙ্গীর গেট এলাকায় আরও বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জরুরি সেবা ও সাংবাদিকদের যে মুভমেন্ট পাস লাগে না সে বিষয়টি মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা অনেকেই জানেন না। তাই তারা এমন আচরণ করছেন।

তাদেরকে পুলিশ সদর দফতর থেকে এ বিষয়ে আরও সঠিক ও পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া দরকার বলে ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা মনে করেন।

এছাড়া গত দুইদিন ধরে জরুরি চিকিৎসা সেবায় বের হওয়া চিকিৎসকদেরও বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন পুলিশ সদস্যরা। শুধু হয়রানিই নয়, অনেকে জরিমানারও শিকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে জানানো হয়, জরুরি সেবা সংশ্লিষ্ট লোকজন যারা আছে তাদের কোনো ধরনের মুভমেন্ট পাস প্রয়োজন নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা দূর করার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন।


এমএসি/জেডএস